খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে উত্তাল ক্যাম্পাস। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সরকারকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে দাবি না মানা হলে তারা আমরণ অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই আলটিমেটাম ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, প্রায় দুই মাস আগে সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছিল। তারা আশা করেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ আসবে। কিন্তু সরকার এ বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন তারা।
তাদের ভাষায়, আমরা ভেবেছিলাম, এই সরকার আমাদের রক্তের বিনিময়ে গঠিত। তাই সরকার আমাদের পক্ষে থাকবে। কিন্তু আমরা হতাশ হয়েছি।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, আমাদের পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়ন হলে আমরা ভিসি পদত্যাগের দাবিতে আর অটল থাকতাম না। কিন্তু তিনি আমাদের দাবি মানেননি, বরং দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছেন। তাই আমরা বাধ্য হয়ে এখন এক দফা দাবিতে অবিচল রয়েছি। প্রেস ব্রিফিং শেষে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার থেকে শুরু হয়ে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবন প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল থেকে কুয়েট শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগ দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করে আসছেন। দাবি আদায় না হলে এবার তারা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়— আমরণ অনশন শুরু করবেন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোকজন আহত হন। পর দিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ১৩ এপ্রিল বিকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে আন্দোলন আবারো দানা বাঁধতে থাকে।
গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
কেকে/এএম