বান্দরবানের থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নের ঝিরিমুখ এলাকায় সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে জলকেলি উৎসব করেছে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির সদস্যরা।
গেল বুধ ও বৃহস্পতিবার (১৬ ও ১৭ এপ্রিল) পার্বত্য জেলা বান্দরবানে মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব উপলক্ষ্যে এই জলকেলীর আয়োজন করে আরাকান আর্মির সদস্যরা। এসময় অনুষ্ঠানে বিজিবির সদস্যদের ঘটনাস্থলে দেখা গেছে যারা অনুষ্ঠানস্থলের আশেপাশে পোষাক পরিধান করে টহল দিচ্ছে, যার কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
এদিকে এমন আয়োজনে যোগ দিয়ে নেচেঁ-গেয়ে আনন্দ উদযাপনের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়েছেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য খামলাই ম্রো, রেমাক্রি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুইশৈইথুই মারমা রনি, ২ নম্বর তিন্দু ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মংপ্রু মারমাসহ থানচি উপজেলার বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
সীমানা লঙ্ঘন করে আরাকান আর্মির জলকেলি উৎসব
তবে সাংগ্রাই উপলক্ষ্যে এই আয়োজন স্থানীয়রা করেছে বলে দাবি করার পাশাপাশি অনুষ্ঠানে স্থানীয় যুবকরা আরাকান আর্মির পোষাক পরিধান করে নাচ-গান করেছে এবং এই ঘটনাকে অনেকে রং লাগিয়ে নিউজে প্রচার করছে বলে দাবি করেন রেমাক্রি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
মুইশৈইথুই মারমা রনি জানান, সাংগ্রাই উৎসব উপলক্ষ্যে আমরা এই আয়োজনে সামিল হয়েছি আর স্থানীয় যুবকরা বাজার থেকে একই রঙ্গের টি শার্ট পরে গান বাজনা করেছে। শুধুমাত্র স্থানীয় শিল্পীরা এখানে গান করেছে আরাকান আর্মির কোন কেউ ছিল না।
ব্যানারে ইংরেজিতে আরাকা লেখা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আরাকা শব্দটি পালি ভাষা আর এর বাংলা হলো ক্ষুদ্র জাতিস্বত্তা।
জানা যায়, বাংলাদেশের বান্দরবান সীমান্তের ১০ কিলোমিটার ভেতরে আরাকান আর্মির সদস্যরা অনুপ্রবেশ করে, পরে তারা থানচি উপজেলার তিন্দু ইউনিয়নের রেমাক্রি ঝিরিমুখ এলাকায় স্থানীয় পাহাড়িদের নিয়ে গত ১৬ ও ১৭ এপ্রিল জলকেলি উৎসবে অংশ নেন। উৎসব শেষে আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদের সামাজিক যোগাযোগগ মাধ্যমে অনুষ্ঠানের ভিডিওি ও ছবি শেয়ার করে।
এদিকে ঘটনার বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ-আল-ফয়সাল জানান, ঘটনার পরপরই প্রশাসন বিষয়টি তদন্তে কাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, বিষয়টি জানার পর উর্ধতন কর্মকর্তাকে আমরা অবগত করেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, আরাকানরা বান্দরবানের থানচিতে বৈসাবি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছে এমন একটি তথ্য আমরা জানতে পেরেছি, তবে বিষয়টি কতটুকু সত্য উদঘাটন করতে আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করছে। জায়গাটি দুর্গম, তাই তথ্য উদঘাটনে সময় লাগবে।