শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় বোরো ধানক্ষেতে হানা দিয়েছে বন্যহাতির পাল। গত কয়েকদিন ধরে একদল বন্যহাতি পাহাড়ি এলাকার কৃষকের সবজি ও বোরো ধানক্ষেত খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে বিনষ্ট করে চলেছে। ফসল রক্ষায় এক সপ্তাহ ধরে মশাল জ্বালিয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে সীমান্তবাসীর।
সরেজামিনে ওই এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, গত কয়েকদিনে উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের পানিহাটা, ফেকামারী ও তালতলা এলাকায় এই তাণ্ডব চালায়।
এলাকাবাসী জানায়, পাহাড়ি বন্যহাতির একটি দল ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরেংপাড়া পাহাড়ি অঞ্চলে আস্তানা করেছে। দিনে পালিয়ে থাকে গহিন অরণ্যে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে নেমে আসে রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের পানিহাটা এলাকার ফসলি মাঠে। ফসল রক্ষায় রাত জেগে মশাল জ্বালিয়ে পটকা ফুটিয়ে ও ঘণ্টা বাজিয়ে হৈ-হুল্লোড় করে পাহারা দিতে হচ্ছে চাষিদের। এরপরও থামছে না হাতির তাণ্ডব। এতে কৃষকের পড়েছে মাথায় হাত।
ওই এলাকার কৃষাণী জসমিনা জানান, তার আবাদি ৫০ শতক জমি হাতিরদল খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে বিনষ্ট করেছে। এখন তিনি কি খেয়ে বাঁচবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছেন।
একই এলাকার কৃষক হারেজ আলী বলেন, তার নিজের ৩৫শতকসহ এলাকার আব্দুস সাত্তারের ৩৫ শতক, কাজীমুদ্দীনের ২৫ শতক বোরো ধান ক্ষেত খেয়ে পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করেছে। এ সময় কৃষক হারুন অর রশিদের ৫৫ শতক জমির মিস্টি লাউ এবং মুর্শিদ আলীর ২০ শতক মিস্টি লাউ ক্ষেত খেয়ে একেবারে শেষ করে দিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা আরো জানান, তাদের আবাদি জমির ধানে এখন প্রায় পেকে এসেছে আর কয়েকদিন পড়েই ধান কাটা যেত। এমন সময়ে বন্যহাতি এসে ধান খেয়ে ফেলেছে। তাদের এখন বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল।
কৃষাণী আশালতা নেংওয়া, বিজার কুবি, হোসেন আলীসহ অনেকেই জানান, বিকাল হলেই বাবুরা (হাতির পাল) নেমে আসে পাহাড় থেকে। প্রতি বছর তাদের আবাদি জমি খেয়ে সাবাড় করছে। সোলার ফেন্সিং দিয়ে তাদের কোনো উপকারে আসছে না। সোলার ফেন্সিং ধুমড়েমুচড়ে হাতির দল চলে আসে আবাদি জমিতে। কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বনবিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. দেওয়ান আলী বলেন, হাতি প্রতিরোধে এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্যরা কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত হাতি যেসব কৃষকদের ফসল নষ্ট করেছে তাদেরকে বন বিভাগের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পেতে আবেদন করতে বলা হয়েছে।
কেকে/ এমএস