নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতা সাগর হাসানকে ছাড়িয়ে নিতে থানা ঘেরাও করেছেন তার স্বজন ও প্রতিবেশীরা। এ সময় থানা ঘেরাওকারীদের ওপর বিএনপির কর্মীরা হামলা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে আড়াইহাজার উপজেলায় গণগ্রন্থাগারে অস্থায়ী পুলিশ স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতার নাম সাগর হাসান। তিনি উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকারি সফর আলী কলেজের ছাত্র। উপজেলার কল্যান্দী গ্রামের কবির হাসানের ছেলে তিনি।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘সাগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘটিত দুটি হত্যা মামলার সন্দেহভাজন ও একটি ঋণখেলাপির মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি। দুপুরে তিনটি মামলাতেই তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।’
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পুলিশ কল্যান্দী এলাকা থেকে সাগর হাসানকে আটক করে থানায় নেয়। সকালে সাগরের গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে তার স্বজনরাসহ শত শত নারী পুরুষ মিছিল নিয়ে থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হন এবং থানা ঘেরাও করে রাখেন। এ সময় তারা স্লোগান দিতে থাকে, ‘আমার ভাই থানায় কেন, জবাব চাই, ‘আমারে ছেলে থানায় কেন, জবাব চাই।’ এলাকাবাসীর সঙ্গে সরকারি সফর আলী কলেজের সাগরের সহপাঠীরা যোগ দেন। শিক্ষার্থীরা সাগরের মুক্তির দাবীতে স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভের একপর্যায়ে পুলিশ থানার প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়। থানা ঘেরাওয়ের পর স্থানীয় বিএনপি, মহিলা দল ও ছাত্রদলের কয়েকজন নারী কর্মী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলার চেষ্টা করেন। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
থানা ঘেরাওয়ের সময় ঘটনাস্থলে থাকা সাগরের এক নারী আত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা থানায় যাইয়া জানতে চাইছি, কোন মামলায় সাগরকে গ্রেফতার করা হইছে। পুলিশ আমাদের কোনো তথ্য দিতেছিল না। তখন আমরা বিক্ষোভ করি। এ সময় থানার ওসি বিএনপির লোকজনকে খবর দিয়ে আমাদের উপর হামলা করিয়েছে।’
তবে ওসি এনায়েত হোসেন এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতার স্বজনেরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে পুলিশ থানার গেট বন্ধ করে দিয়ে ভেতরে অবস্থান নেয়। তখন এলাকার কিছু বিএনপি ও ছাত্রদলের নারী কর্মীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতার মাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। বাকিদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।’
থানায় ছাত্রলীগ নেতার স্বজনদের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী বলেন, ‘মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। এমনটা হলে আমি জানতাম। আমি এ বিষয়ে খোঁজ নেব। এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কেকে/ এমএস