গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নীট হরাইজন গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা বকেয়া বেতন পরিশোধ ও কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে শ্রীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বহেরারচালা গ্রামের গার্মেন্টসের কয়েক হাজার শ্রমিক কারখানার মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
কারখানার শ্রমিক লামিয়া আক্তার বলেন, সকালে কারখানায় কাজ করতে এসে দেখি প্রধান ফটক বন্ধ। কারখানার ফটকের সামনে সাদা কাগজে লেখা অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ। আদেশক্রমে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কারখানা বন্ধ করবে ভালো কথা, আমাদের বেতন-ভাতা পরিশোধ না করে কেন? আমাদের এক মাসের বেতন বকেয়া। শ্রমিক আইনের কোনো তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র আমাদের ওপর অন্যায় করা। আমরা শ্রমিক বলে আমাদের জীবনের কোনো মূল্য নেই? আমাদের কষ্টের কথাগুলো সবার কানে পৌঁছায় না।
কারখানার শ্রমিক শাহরিয়ার হাসান জয় অভিযোগ করে বলেন, গতকাল কারখানার ৩০ জন শ্রমিক অন্যায়ভাবে ছাঁটাই করা হয়। এর প্রতিবাদে শ্রমিকেরাগাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নীট হরাইজন গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা বকেয়া বেতন পরিশোধ ও কারখানা খুলে দেওয়ার দা কর্মবিরতি পালন করেন। গতকাল কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের পুনরায় কাজে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে শ্রমিকেরা বাসায় ফিরে যান। আজ বুধবার যথারীতি শ্রমিকেরা কর্মস্থলে এসে দেখেন কারখানার মূল ফটকে তালা ঝুলছে। এটা অন্যায় কাজ। পূর্ব নোটিশ ছাড়া শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ না করে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রধান ফটকে তালা দিয়েছে।
কারখানার শ্রমিক লিলি আক্তার বলেন, যত অন্যায়, সব আমাদের শ্রমিকদের সঙ্গে। কেন, আমরা কি মানুষ না? আমরা তো আমাদের দুধের শিশু অনাদর-অবহেলায় বাসায় ফেলে রেখে কাজ করতে আসি। রক্ত পানি করে মাস শেষে বেতনের অপেক্ষায় থাকি। আমাদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে আমাদের মা-বাবা, অবুঝ সন্তানেরা। আমাদের ওপর এমন অন্যায় কেন?
সোলাইমান সেলিম নামে এক শ্রমিক জানান, গতকাল কারখানা কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে ৩০ জন শ্রমিককে বিনা নোটিশে ছাঁটাই করে কর্মস্থল থেকে বের করে দেয়। বিষয়টি জানার পরপরই সব শ্রমিক ফুঁসে ওঠে কর্মবিরতি পালন করে। সেই ইস্যুতে কারখানা কর্তৃপক্ষ বিনা নোটিশে কারখানা বন্ধের নোটিশ দিয়েছে।
কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬ ধারা ১৩ (১) লঙ্ঘনের অভিযোগে কারখানা কর্তৃপক্ষ নিরুপায় হয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইন ধারা ১৩ (১) অনুযায়ী কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ দিয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের সমস্ত পাওনা পরিশোধ করা হবে।পাওনা পরিশোধ না করে কারখানা বন্ধ কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিস্থিতির জন্য এই সিদ্ধান্ত।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, বিষয়টি জানার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
কেকে/এএম