লালমনিরহাটের বুড়িমারী রেলস্টেশন থেকে সরাসরি আন্তনগর ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস ও লালমনি এক্সপ্রেস’ ট্রেন চালুর দাবিতে চলমান অবরোধ কর্মসূচি অবশেষে স্থগিত করা হয়েছে। লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে এক মাসের মধ্যে বুড়িমারী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের জন্য ‘স্পেশাল ট্রেন’ চালু হচ্ছে, রেলওয়ে কতৃপক্ষের এমন আশ্বাসে পাটগ্রামে ৯ দিন পর মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ প্রত্যাহার করেছে আন্দোলনকারীরা।
এর আগে, হাতীবান্ধা উপজেলার আন্দোলনকারীরা সোমবার রাতে তাদের অনির্দিষ্টকালের অবরোধ স্থগিত করার পর মঙ্গলবার একই পথে হেঁটেছেন পাটগ্রাম উপজেলার আন্দোলনকারীরাও।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনার মাধ্যমেই এই অচলাবস্থার নিরসন হয়েছে। সরাসরি বুড়িমারী রেলস্টেশন থেকে ট্রেন দুটি চালুর দাবিতে গত ২১ এপ্রিল থেকে টানা রেলপথ অবরোধের পাশাপাশি রোববার হাতীবান্ধা ও সোমবার থেকে পাটগ্রামে অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়কপথ অবরোধ শুরু করেছিলেন স্থানীয়রা।
এই অবরোধের ফলে উভয় উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রেললাইন এবং মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নিয়েছিলেন। এর মারাত্মক প্রভাব পড়ে বুড়িমারী স্থলবন্দর-পাটগ্রাম সড়ক, সরকারি কলেজ মোড়, সরেঅর বাজার, বাউরা বাজার এলাকা এবং হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা, মিলন বাজার, খানের বাজার ও মেডিকেল মোড় থেকে কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার মহাসড়কে। শত শত পণ্যবাহী ও খালি গাড়ি আটকা পড়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগের শিকার হন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহাবুবুর রহমানের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হাতীবান্ধা উপজেলার আন্দোলনকারীদের সাথে দীর্ঘ আলোচনা করেন। এই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে রাত সাড়ে ১০টায় অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করেন হাতীবান্ধার আন্দোলনকারীরা।
তবে, পাটগ্রামের আন্দোলনকারীরা তাদের অবরোধ অব্যাহত রেখেছিলেন। অবশেষে, মঙ্গলবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জি আর সারওয়ারের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের আরেকটি প্রতিনিধি দল পাটগ্রামের আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনায় বসেন। এই সময় পাটগ্রামের ইউএনও জিল্লুর রহমান, থানার ওসি আশরাফুজ্জামান সরকার, পৌর বিএনপির সভাপতি মোস্তফা সালাউজ্জামান ওপেল, বুড়িমারী এক্সপ্রেস বাস্তবায়ন সংগ্রাম উন্নয়ন পরিষদের আহ্বায়ক এ টি জে সিদ্দিকী কাকন ও সদস্য সচিব আকবর বিন আফছার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আন্দোলনকারীদের জানান যে, রেলওয়ে ও জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন দ্রুত সরাসরি বুড়িমারী থেকে চালুর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও, ট্রেনটি চালু না হওয়া পর্যন্ত একটি বিশেষ শাটল সার্ভিস ট্রেন (বুড়িমারী এক্সপ্রেস-০২) চালু রাখার আশ্বাস দেন তিনি। এই আশ্বাসের প্রেক্ষিতেই আন্দোলনকারীরা তাদের দীর্ঘদিনের অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।
তবে, আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন যে, যদি আগামী এক মাসের মধ্যে বিশেষ শাটল সার্ভিস ট্রেন (বুড়িমারী এক্সপ্রেস-০২) চালু করা না হয়, তাহলে তারা আবারও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।
কেকে/ এমএস