অবৈধভাবে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের আকাশসীমার মধ্যে টহল দিচ্ছিল ভারতীয় ৪টি রাফাল যুদ্ধবিমান, পাকিস্তানি বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে সাথে সাথে পালিয়ে যায়।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান বিমানবাহিনী (পিএএফ)।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় বিমানগুলি অবৈধভাবে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের আকাশসীমার মধ্যে টহল দিচ্ছিল, সেই সময় পাকিস্তান বিমানবাহিনী ভারতের বিমানগুলির উপস্থিতি টের পায় এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায়। তখন সেগুলো পিছু হটতে বাধ্য হয়।
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে হওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। ওই হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান, যাদের অধিকাংশই পর্যটক ছিলেন। ২০০০ সালের পর এটিই কাশ্মীর অঞ্চলে অন্যতম রক্তক্ষয়ী হামলা। ঘটনাটি ঘিরে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। হামলার পর ২৩ এপ্রিল ভারত একতরফাভাবে ‘ইনডাস ওয়াটার ট্রিটি’ স্থগিত ঘোষণা করে— যা বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত একটি ঐতিহাসিক পানি বণ্টন চুক্তি। এর পরদিন পাকিস্তান ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি স্থগিত রাখার এবং ভারতীয় বিমানের জন্য তার আকাশসীমা বন্ধ করার হুমকি দিয়ে প্রতিশোধ নেয়।
এদিকে ভারত বলেছে, পেহেলগামের হামলার সঙ্গে সীমান্ত পার হয়ে আসা সন্ত্রাসীদের যোগসূত্র থাকতে পারে, যদিও এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের নির্ভরযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। পাকিস্তান এই অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তারা এ ঘটনায় কোনোভাবেই জড়িত নয়।
পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই ঘটনায় স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে প্রকৃত তথ্য উঠে আসে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আত্তা তারার মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিকদের জানান, পাকিস্তানের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য’ রয়েছে যে ভারত আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে একটি সামরিক অভিযান চালাতে পারে এবং পাহেলগামের হামলাকে সেই আক্রমণের ‘অজুহাত’ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।
তিনি ভারতের মনোভাবকে ‘বিচারক, জুরি এবং কার্যনির্বাহী— তিন ভূমিকায় নিজেকে বসিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রবণতা’ বলে আখ্যায়িত করেন এবং এটিকে অঞ্চলীয় স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে সতর্ক করেন।
পাকিস্তান এক সরকারি বিবৃতিতে জানায়, আমরাও বহুবার সন্ত্রাসবাদের শিকার হয়েছি, তাই এর ব্যথা ও পরিণাম আমরা ভালোভাবেই জানি। ইসলামাবাদ এরই মধ্যে আঞ্চলিক শান্তি ও কূটনৈতিক সংযম ও আঞ্চলিক শান্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
কেকে/এআর