প্রকাশ: শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০২৪, ১১:৫৮ এএম (ভিজিটর : ১৬)
আলোচিত অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরী। টেলিভিশন নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি সম্প্রতি মঞ্চে এসেছে তার নতুন নাটক। অভিনয় ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন মাসুদুর রহমান
আজ নারী দিবস। দিবসটি নিয়ে আপনার বক্তব্য কী?
প্রথমত আমি একজন মানুষ। এটিই আমার আসল পরিচয়। বছরের বিভিন্ন দিবস নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ নেই। প্রতিটি দিনই আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। আলাদাভাবে কোনো দিনকে মূল্যায়ন করি না। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যেই এসব দিবস তৈরি হয়েছে বলে মনে করি। তা না হলে নারী দিবস থাকলে পুরুষ দিবস নেই কেন? সামাজিকভাবে এই দিবসগুলো পালন করা হলেও আমি এর বাইরে থাকার চেষ্টা করি। ডাকা হলেও অনেক অনুষ্ঠানে যাই না। তবে বাধ্য হয়ে কিছু কিছু আয়োজনে থাকতে হয়। অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয়ের দিনগুলোকেই গুরুত্ব দিই।
অভিনয়ের সব মাধ্যমেই কাজ করছেন। মঞ্চের বর্তমান ব্যস্ততা কেমন যাচ্ছে?
সম্প্রতি ‘রঙিন চরকি’ নামে নতুন একটি নাটকের মঞ্চায়ন করেছি। নিজের ঘরে কন্যা সন্তানরা যে নিরাপদ নয় সেটিই তুলে ধরা হয়েছে নাটকে। মান্নান হীরার রচনায় এর নির্দেশনা দিয়েছেন তরুণ নির্দেশক সাজিদুর রহমান। প্রদর্শনীর পর দর্শকরা নাটকটির প্রশংসা করেছেন। এ ছাড়া নিয়মিত ‘লাল জমিন’র প্রদর্শনী চলছে। নাটকটি নিয়ে আমরা বিভিন্ন কলেজে যাচ্ছি। চলতি বছরেই এর কয়েকটি মঞ্চায়ন করেছি। কয়েক দিন আগে নাটকটির ৩৩৬তম প্রদর্শনী হয়েছে। বরাবরের মতো দর্শকের ভালো সাড়া পাচ্ছি।
‘লাল জমিন’ সাফল্যের রহস্যটা কোথায়?
শুধু দেশেই নয়, বিদেশের মঞ্চেও ‘লাল জমি’ প্রশংসিত হয়েছে। নাটকটি মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের এক নারীর সংগ্রামী জীবনের নাট্যপ্রকাশ। যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় ছিলেন তারা নাটকটির মাধ্যমে আবার মুক্তিযুদ্ধের খণ্ডচিত্র দেখেন। আর তরুণরা ৭১ সম্পর্কে জানতে পারে। এর প্রতিটি প্রদর্শনীই সফল। এর শেষ প্রদর্শনীটি ছিল খাদিজা নামে একজন অসুস্থ নারীর সাহায্যার্থের জন্য। দর্শক যারা ছিলেন তারা এর আগে মঞ্চনাটক দেখেননি। সবাই ব্যাংকে চাকরি করেন। নাটকটি দেখে তারা কেঁদে ফেলেন। বিভিন্ন এলাকায় এমন অনেক দর্শক আছেন সেখানে যতবার নাটকটির প্রদর্শন হয়েছে ততবার দেখেছেন আর কেঁদেছেন।
নাটক-সিনেমায় কী কী কাজ করছেন?
বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার চলতি কয়েকটি ধারাবাহিক নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। এর মধ্যে ‘বকুলপুর’, ‘গোলমাল’, ‘হাবুর স্কলারশিপ’, ‘দাদাজান’, ‘বালিঘর’। ১২ মার্চ থেকে ‘সালেহা’ নামে বাংলাদেশ টেলিভিশন বিটিভির একটি নাটকে কাজ করব। সম্প্রতি দুটি একক নাটকে অভিনয় করেছি। এ ছাড়া একটি সিনেমার কাজও শেষ করেছি। ভালো গল্প ও চরিত্র না হলে অভিনয় করছি না।
বর্তমান টেলিভিশন নাটক ও ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?
ওটিটির কোনো কিছু আমি দেখি না। এখানে গালাগাল ও নোংরা ভাষার ব্যবহার হয়। আর টেলিভিশন নাটকের অবস্থা খুব ভালো যাচ্ছে না। ভালো নাটক খুঁজে বের করা কঠিন। দর্শক তো এখন ইউটিউব থেকেই নাটক দেখেন।
‘তীর-কাঁচখেলা’ সম্মাননা পাচ্ছেন। এ নিয়ে আপনার অনভূতি জানতে চাই?
তেমন কোনো অনুভূতি নেই। মঞ্চে একক অভিনয়ের জন্য এই সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে। আমি আসলে কোনো সম্মাননা পাওয়ার জন্য অভিনয় করি না। দর্শকের ভালোবাসাই আমার বড় সম্মাননা ও পুরস্কার। ‘লাল জমিন’ দেখে এক দর্শক আমাকে একটি লাল কলম উপহার দিয়েছিলেন। এক রিকশাচালক সারা দিনের আয় ৭৫ টাকা হাতে তুলে দিয়েছিলেন। এটাই আমার বড় প্রাপ্তি। এর চেয়ে পুরস্কার ও সম্মাননা আর নেই।