জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) সামনে আগারগাঁও থেকে শ্যামলীমুখী সড়ক দুপুর থেকে বন্ধ করে দিয়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আন্দোলনের আহতরা। এখন পর্যন্ত তারা রাস্তাতেই রয়েছে। তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত তারা রাস্তায় থাকবে বলে জানিয়েছে আহতরা।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে তারা সড়কে নেমে আসেন। ফলে শ্যামলীমুখী সড়কে গাড়ির চাপ ক্রমাগত বাড়ছে এখন পর্যন্ত আহতরা রাস্তায়ই রয়েছে। তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত রাস্তায়ই থাকবেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম নিটোর পরিদর্শনে আসেন। তারা চতুর্থতলার পুরুষ ওয়ার্ড প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় নিয়ে ঘুরে দেখে বের হওয়ার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু তিনতলার ওয়ার্ডে থাকা ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে না যাওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে তারা নিচে এসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি গাড়ি আটকে দেন। তাদের মধ্যে কেউ একজন গাড়ির বা সামনের চাকার সামনে বসে পড়েন। আরেকজন উঠে পড়েন গাড়ির ছাদে। সেই সকাল ১১ টা থেকে এখন পর্যন্ত রাস্তায় রয়েছে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরা।
এবিষয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার (এডিসি) বলেন,আমরা রাস্তা ছাড়ার জন্য অনেক অনুরোধ করেছি কিন্তু এদের অনেক দাবিদাওয়া রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এদের দাবিদাওয়া মেনে না নিলে রাস্তা ছাড়বে না বলে জানান। তাদের অনেক অনুরোধ করার পরও রাস্তায়ই রয়েছে তাদের দাবি না মানলে, রাস্তায়ই থাকার ঘোষণা দিয়েছে। এরমধ্যে ইমারজেন্সি গাড়িগুলো আমরা অন্য বিকল্প রোড ব্যবহার করতে পুলিশ সহযোগিতা করছেন। তিনি বলেন, বেলা ২ টা থেকে আজকের এই আন্দোলন শুরু করে, সন্ধ্যা ৬ টা বাজে এখনো চলছে।
এরমধ্যে এখন পর্যন্ত সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কেউ আসেনি বলে জানান আহতরা। আহতরা বলেন, আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা এখান থেকে সরবো না। আহতদের যে দাবি রয়েছে এর মধ্যে, তাদের উন্নত চিকিৎসা, পুর্নবাসন হস অর্থনৈতিক সহযোগিতা। অনেকেই বলেন, আমরা জীবনের বিনিময়ে রাজপথে নেমে নতুন করে দেশ স্বাধীন করে দিয়েছি কিন্তু আমাদের খোঁজ কেউ রাখেনি।
আহত মো. শাহিন নামে একজন বলেন, ১৮ জুলাই চাঁদ উদ্যান এলাকায় ছাত্র আন্দোলনের সময় হাতে এবং পেটে গুলি লাগে। তার পেটে গুলি লেগে এফোঁড়ওফোঁড় হয়ে আহত হয়ে যায় কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ খোঁজ নেয়নি। তিনি আরো বলেন,৬ আগস্ট থেকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুর্নবাসন (নিটোর) পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি এরমধ্যে আমার পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছি কেউ খোঁজ নেয়নি।
সরকারি সহযোগিতার কথা থাকলেও তিনি কোনো সহযোগিতা পায়নি বলে জানান। তার ছোট একটি শিশু রয়েছে, শহিন ঢাকার মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যান এলাকায় ভাড়া বাসায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকেন। একসময় ড্রাইভারী চাকরি করে তার ভালোই চলছিলো কিন্তু জুলাই মাসে আন্দোলনে যোগ দিয়ে এখন তিনি অসহায় জীবনযাপন করছেন বলেও জানান এই প্রতিবেদককে।
কেকে/এইচএস