বিদ্যুৎ খাতের মাফিয়া আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম এখন কোথায়? ফেনীতে এখন এটি সবার প্রশ্ন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মীরা যখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমকে উল্লাস করতে দেখা গেছে।
ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গুলি করে ১৩ জনকে হত্যা করার ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্যতম আসামি ফেনী-১ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। ফেনীতে তার নামে তিনটি হত্যা মামলা হয়েছে। আলাউদ্দিন নাসিমের নির্দেশেই ফেনীতে ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
জানাগেছে, যার হাত ধরে দেশে গত ১৬ বছরে বেসরকারি বিদ্যুৎ খাতে মহালুটপাটের ঘটনা ঘটেছে তিনি আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। পতিত শেখ হাসিনার ঘনিষ্টজন হওয়ায় বিনা পূজিতে ব্যবসায়িক পার্টনার হয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের প্রকল্প থেকে বিদেশে পাচার করেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা।
ডাচ-বাংলা পাওয়ার অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের ৩০ শতাংশ শেয়ারের মালিক ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। শুধু বিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা লোন নিয়ে বিদেশে পাচার করেন তিনি। জালিয়াতি ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে ঋণ নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন নাসিম দেশটিকে বানিয়েছিলেন অনিয়ম ও দুর্নীতির ‘স্বর্গরাজ্য’। মিস্টার টোয়েন্টি পার্সেন্ট হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন দেশব্যাপী। তাকে ২০ পার্সেন্ট কমিশন না দিলে কোনো টেন্ডারই পেতো না ব্যবসায়ীরা। প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই তিনি বুঝে নিতেন তার কমিশনের টাকা। বিভিন্ন সময় দুর্নীতির কারণে অনেকেই ধরা পড়লেও সব সময় অন্তরালে থেকে যেতেন দুর্নীতির বরপুত্র খ্যাত আলাউদ্দিন নাসিম। শেখ হাসিনার ম্যানেজার হিসেবে ছিলেন বহাল তবিয়তে।
বিগত সরকারের আমলে প্রভাবশালী এই সাবেক এমপিকে ব্যবসায়িক পার্টনার বানিয়ে কোনো রকম টেন্ডার বা প্রতিযোগিতা ছাড়াই সরকারের কাছ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বড় বড় প্রকল্প বাগিয়ে নেন এক আলোচিত ব্যবসায়ী। তাকে সামনে রেখেই চালানো হয় লুটপাট। এসব কারণেই ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিমের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আলাউদ্দিন নাসিম বাংলাদেশের অন্যতম মাদক ব্যবসায়ী। রাজধানীর অভিজাত গুলশান এলাকায় রয়েছে তার মদের গুদাম। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মদের গুদাম বলে আলোচিত। এ ছাড়া বিভিন্ন ক্লাব থেকে সদস্যদের জন্য কম দামে কেনা মদ তিনি বেশি দামে বিক্রি করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। স্থানীয়দের মতে, এমপি ও তার পরিবারের সদস্যদের দেশ-বিদেশে নামে-বেনামে রয়েছে হাজার কোটি টাকার অর্থ-সম্পদ। এ ছাড়াও কানাডায় রয়েছে বাড়ি-গাড়ি। মেয়ে রাকা চৌধুরী এখনও কানাডায় অবস্থান করছেন।
কেকে/এমআই