প্রকাশ: শনিবার, ৯ মার্চ, ২০২৪, ৭:০৪ এএম আপডেট: ২৬.০৯.২০২৪ ২:৫৭ পিএম (ভিজিটর : ১০৪)
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জাজিরা ক্যান্টনমেন্ট থেকে গণিরমোড় পর্যন্ত সংযোগ সড়কে সপ্তাহ পার না হতেই উঠে গেছে কার্পেটিং। ফলে সংস্কার শেষ না হতেই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যানবাহন চালক, পথচারী ও এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর অভিযোগ সড়কটি সংস্কারের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এই সড়কের সংস্কার কাজের জন্য ৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোহাম্মদ ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স প্রাইভেট লি. এর পক্ষের রাসেদ উজ্জামান শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক রাশেদুজ্জামান কাজটি করছেন। ব্যয় বাবদ এপর্যন্ত ঠিকাদার ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা উঠিয়ে নিয়েছে।
গত বুধবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির জাজিরা ক্যান্টনমেন্ট থেকে গনির মোড় এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। যেসব স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে সেসব স্থানে উপজেলা প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের উপস্থিতিতে নতুন করে আবারও কার্পেটিং করা হচ্ছে।
এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ঠিকাদার সড়কটির কার্পেটিং করার সময় পুরনো ইট খোয়া ও নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়াও সড়কটি সংস্কারের সময় সঠিকভাবে রোলিং ও মজবুতিকরণ না করে তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করেছে। ফলে সপ্তাহ পার না থেকেই রাস্তার কার্পেটিং উঠে গিয়ে আগের মতো খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী জামাল প্রামানিক বলেন, সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার ৬/৭ দিন পর সড়কের কার্পেটিং উঠতে শুরু করে। ৬ মাস পর সড়কটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে। সরকার অর্থ ব্যয় করে ঠিকই কিন্তু সঠিকভাবে কাজ হয় না।
এক মোটরসাইকেল আরোহী সাংবাদিকদের দেখে কাছে এসে বলেন, ঠিকাদার এখানে ১০০ টাকার জায়গায় ৯০ টাকাই খেয়ে ফেলেছেন। তাই এই সড়কটির কাজ শেষ না হতেই এমন বেহাল অবস্থা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন সরকারের এমন দুর্নাম করবেন না। দ্রুত এই সড়কটি সঠিকভাবে সংস্কারের ব্যবস্থা করুন।
সড়কের সংস্কার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি রাশেদ উজ্জামানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি।
কতদিন আগে এ সড়কের কার্পেটিং শেষ হয়েছে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সপ্তাহ খানেক আগে।
এর মধ্যেই কার্পেটিং উঠে গেলো কেন জানতে তাইলে তিনি সাংবাদিকদের নিউজ না করার অনুরোধ করে বলেন, আমি জেলা ছাত্রলীগ এর যুগ্ম আহ্বায়ক।
এবিষয়ে জাজিরা উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইমন মোল্লা প্রথমেই কাজে গাফিলতির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, যেসব জায়গায় কার্পেটিং উঠে গেছে তা ঠিক করে দেওয়া হবে। নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারকে বিষয়টি জানিয়েছি।
নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রাফেউল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি শুনে আমি নিজেই সড়কটি পরিদর্শন করেছি। ঐ সড়কের ব্যবহৃত বিটুমিন আমরা পরীক্ষা করেছি। তা ঠিক আছে। এখন যে সমস্যাটি হয়েছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে বর্তমান কার্পেটিং উঠিয়ে সড়কের একপাশ বন্ধ করে নতুন করে আবার কার্পেটিংয়ের ব্যবস্থা করবো।