নাটোরের বড়াইগ্রামে উজ্জ্বল কুমার মন্ডল নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে বেধড়ক পেটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হবার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রবিবার দুপুরে উপজেলার কালিকাপুর দিয়ারপাড়ায় গিয়ে আহত উজ্জ্বলের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন তিনি।
পরে শহরের আলাইপুরে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী সাংবাদিকদের জানান, তারেক রহমানের নির্দেশে তিনি ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে দেখা করে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের আটক করে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবার জন্য বড়াইগ্রাম থানার ওসিকে বলেছেন। সেই সাথে দোষীদের আটক না করে ভুক্তভোগীকেই কেন আটক করা হলো। সে বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে বলে জানান তিনি।
এসময় রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশন একটা স্বাধীন ও সাংবিধানিক সংস্থা। তাদের নিজস্ব ক্ষমতা রয়েছে। নির্বাহী বিভাগ যদি তাদের অন্যায় আদেশ করেন তা না শোনার অধিকার তাদের আছে। কিন্তু শেখ হাসিনা বেছে বেছে এমন লোক দিয়ে নির্বাচন কমিশন করতেন তারা শেখ হাসিনার কৃতদাস হয়ে কাজ করতো। এদের কাছে অবাধ সুষ্ট নির্বাচনের কোন মুল্যই ছিলো না। ভোটারদের কোন দামই ছিলো না। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ভোটারা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে যাবে এবং ভোটের পরিবেশ থাকবে শান্তিপুর্ন। যেটার জন্য জনগন সবসময় সমর্থন দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জুলাই আগষ্টের ছাত্র জনতার যে আন্দোলন সেখানেও ছিল গণতন্ত্রের আন্দোলন, সেখানেও ছিল ফ্যাসিবাদকে পতনের আন্দোলন। ফ্যাসিবাদ পতনে গণতন্ত্র কোন ব্যাক্তি, দল বা বিশেষ কোন গোষ্টির নয়। এখানে একটা প্রকৃত গণতন্ত্র যে গণতন্ত্রে একজন ব্যাক্তি তার নিজের স্বাধীন ইচ্ছায় তার পছন্দমত প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে সেটাই গণতন্ত্রের প্রকৃত নমুনা।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ, জেলা বিএনপির সদস্য রুহুল আমীন তালুকদার টগর সহ দলীয় নেতা কর্মিরা।
স্থানীয়রা জানান, ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা আওয়ামী লীগ কর্মী উজ্জ্বল কুমার মন্ডল। গত বুধবার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে চিকিৎসক দেখানোর জন্য উজ্জ্বল তার নিজ বাড়িতে আসেন। এ খবর পেয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে উজ্জ্বলের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সবার সামনে তাকে বেধড়ক পেটাতে থাকে। এসময় উজ্জ্বলের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী এবং তার বৃদ্ধ মা বাবা তাকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে তাদেরও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে উজ্জ্বল অচেতন হয়ে যায়।
পরে শুক্রবার সকাল থেকেই সেই ঘটনার ২ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
কেকে/এমএস