বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি ২০২৫,
২৬ পৌষ ১৪৩১
বাংলা English

বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: পালিয়েছে গ্রেফতারকৃত সাবেক ওসি শাহ আলম      শমী কায়সারের ব্যাংকের সবধরনের হিসাব তলব      যানজটের কারণে জনগণের কাছে বিএনপির দুঃখ প্রকাশ      লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন      ডিএমপির ১২ ডিসিকে বদলি      ভারতীয় জেলেদের সাথে দুর্ব্যবহারের তথ্য ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়      অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব জাতীয় নির্বাচন: সাইফুল হক      
প্রিয় ক্যাম্পাস
ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ
ন্যাশনাল মেডিকেল-সোহরাওয়ার্দী কলেজের সঙ্গে ৩৫ কলেজের সংঘর্ষ, আহত ২০
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮:৪৪ পিএম আপডেট: ২৪.১১.২০২৪ ৯:২৩ পিএম  (ভিজিটর : ৯৯)
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

রাজধানীর ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ইনস্টিটিউট হাসপাতাল, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজে হামলা ও ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে রাজধানীর ডা.মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ ৩৫টি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে সাংবাদিকসহ ২০ জন আহত হয়েছে।

রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ১টার পর রাজধানীর প্রায় ৩৫টি কলেজের শিক্ষার্থীরা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের সামনের ফটক অবরোধ করে গেট ও নেম প্লেট ভাঙচুর করে ভিতরে প্রবেশ করে।

পরবর্তীতে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ভিতরে প্রবেশ করে হামলা ও ভাংচুর করেন তারা। এসময় সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজের দিক থেকে কিছু শিক্ষার্থী লাঠিসোটা নিয়ে এগিয়ে আসলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজের দিকে যায়। এসময় উভয় পাশ থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপে আহত শিক্ষার্থীদের আহত অবস্থায় রিক্সা করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।

জানা যায়, ডেঙ্গু শক সিনড্রমে আক্রান্ত হয়ে ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ হালদার গত ১৬ নভেম্বর সকালে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন। ১৮ নভেম্বর হাসপাতালে মৃত্যুরবণ করেন তিনি। অভিজিৎ এইচএসসি ২৪ এর ব্যাচ ছিলো।

তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ২০ ও ২১ নভেম্বরে হাসপাতাল অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ এদিন ন্যাশনাল মেডিকেলের পক্ষ নিয়ে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী ও দুই কলেজের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাদের উপর আক্রমণ করেন।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, অভিজিৎকে হাসপাতাল কতৃপক্ষ ভুল চিকিৎসা দিয়ে মেরেছে। আমরা এর বিচার চাইতে আসি। আমাদের কেনো ছাত্রদল মারলো। আমরা এর বিচার চাই। এই প্রতিবাদেই আমরা অন্য সকল কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানাইতে এসেছি। এদিন দুপুরে পূর্বঘোষিত ‘সুপার সানডে’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সামনে জড়ো হন প্রায় ৩৫ কলেজের শিক্ষার্থীরা। ফেসবুকে গ্রুপ ‘ইউনাইটেড কলেজ অব বাংলাদেশ’ নামক গ্রুপে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ অন্যান্য কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে একত্রিত হয়।

আন্দোলনে আসা কলেজগুলো হলো- ডা.মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ, ঢাকা কলেজ, ঢাকা আইডিয়াল কলেজ, সিটি কলেজ, গিয়াসউদ্দিন কলেজ, সরকারি তোলারাম কলেজ, ইমপেরিয়াল কলেজ, বোরহানউদ্দিন কলেজ, বিজ্ঞান কলেজ, লালবাগ সরকারি কলেজ, উদয়ন কলেজ, আদমজী, নটরডেম, রাজারবাগ কলেজ, নূর মোহাম্মদ, মুন্সি আব্দুর রউফ কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী কলেজ, গ্রীন লাইন পলিটেকনিক, ঢাকা পলিটেকনিক, মাহবুবুর রহমান ইন্সটিটিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি, ঢাকা দনিয়া কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন কলেজ অংশ নেয়।

ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় মারা গেছেন কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানাতে আসলে হামলা চালান নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ারদী কলেজের ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। এর জেরে ৩৫টির বেশি কলেজের শিক্ষার্থীরা একজোটে এ কর্মসূচি পালন করেন।

মৃত শিক্ষার্থী অভিজিৎ এর এক বন্ধু বলেন, আমাদের উপর কেনো হামলা হলো? আমরা এখানে এসে কারো সাথে কথা বলব তেমন কেউ নাই কথা বলার। সবাই পালিয়েছে। কথা বলার কেউ থাকলে আমরা আমাদের দাবি জানিয়ে চলে যেতে পারতাম। কিন্ত একজন গার্ডও নেই। আমরা অভিযুক্ত ডাক্তারের লাইসেন্স বাতিল করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। এ ছাড়া আমাদের উপর যারা হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশের পদক্ষেপ নিতে হবে।

তবে শিক্ষার্থীরা কবি নজরুল কলেজ ছাত্রদলের উপর অভিযোগ করলে ন্যাশনালের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় কোন সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানান কবি নজরুল কলেজের ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন। তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের পক্ষে। আমরা কোন হামলা করিনি।

কলেজ ভাঙচুরের বিষয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক তরিকুল ইসলাম বলেন, আমি তাদের একবার বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। পরে দলবল নিয়ে আবার আসছে। অনেক কম্পিউটার নিয়ে গেছে, ভেঙে ফেলেছে। বিএনসিসির রাইফেল নিয়ে গেছে। সতেরোটা ডিপার্টমেন্টই ভাঙচুর করেছে। এক শিক্ষকের কার, চারটা মোটরসাইকেল ভেঙেছে।

সোহরাওয়ার্দী কলেজের ভাইস-প্রিন্সিপাল ড. ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, কাল ওই কলেজের প্রিন্সিপাল ও আমাদের প্রিন্সিপাল একটা সমঝোতায় এসেছিলেন। আমরা আশ্বস্ত ছিলাম যে এমন কিছু হবে না। কিন্ত তারপরও হামলা হলো। পুরো কলেজে হামলা চালয়েছে। আমার রুম পর্যন্ত ভেঙে ফেলেছে।

সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় বলেন, আজ পরীক্ষা ছিল। গতকাল রাত পর্যন্ত কলেজের অধ্যক্ষের সাথে কথা বলেছি। তারা বলল- শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছে, অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছে। তারা বলল কিছু হবে না। সোয়া একটায় কিছু বোঝার আগেই সিসিটিভিতে দেখি প্রচুর ছেলেমেয়ে এসেছে। গেট ভেঙে ঢুকেছে। ইচ্ছামত ভাঙচুর করেছে। গাড়ি ভাঙচুর করেছে। গ্যাস লাইন ছেড়ে দিছে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের মার্কশিট, খাতা, ল্যাপটপ কিছুই নাই। আমি ঢাবিতে জানিয়েছে। প্রোভিসি বলেছিলেন এপ্লিকেশন পাঠাতে। ভাঙচুরের জন্য তাও পাঠাতে পারিনি। এরা কি ছাত্র হতে পারে? এত নাশকতা তো ছাত্র করতে পারে না।

এদিকে লালবাগ জোনের ডিসি জসিম উদ্দিন বলেন, গত ১৮ তারিখে মাহবুবুর রহমান কলেজের একজন মারা যান। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান আমরা জানতে পারি। গত বুধবার কলেজের শিক্ষার্থীরা হাসপাতালের এখানে এসেছিল। এ ঘটনায় একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু এরপরেও গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা অধিক সংখ্যায় এসেছে। শিক্ষার্থীদের দাবি অবহেলাজনিত মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বার বার বলেছে আমরা শিক্ষার্থী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাথে নিয়ে তদন্ত করব। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চাপের মুখে রাখা হয়।

তিনি আরও বলেন, আজ ছাত্র প্রতিনিধি, মৃতের বাবার হাসপাতালে আসার কথা ছিল। আজ মিটিং ছিল। কিন্তু তারা আসে নাই আমরা জানতে পারি। এদিকে আজ ফের সকালে শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে এসেছে। তারা যাত্রবাড়ি থেকে অনেক সংখ্যায় এসেছে। আজ সকাল বেলা থেকে আমরা চেয়েছি তাদের বুঝাতে। অবশেষে আমরা সংখ্যা বাড়িয়ে বিকেলে তাদের বুঝাতে সক্ষম হই তারা চলে গেছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পালটা ধাওয়ায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পাশাপাশি হেনস্থার শিকার হন সাংবাদিকরাও। হেনস্থার শিকার হয়েছেন দৈনিক ইত্তেফাকের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার জাকির হোসেনের আইফোন ১২ প্রো, মাইক্রোফোন ভেঙে ফেলা হয়। ফোন কেড়ে নেয়া হয় দৈনিক আমাদের বার্তার প্রতিনিধি আসাদুল ইসলাম ও বাংলাদেশের খবরের জবি প্রতিনিধি জান্নাতুন নাইমের। পরবর্তীতে ঘটনার ফুটেজ ডিলিট করে ফোন দেয়া হয়। এ ছাড়া হেনস্থার শিকার হন দৈনিক কালবেলার মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার আমান নবী।

ইত্তেফাকের ভুক্তভোগী সাংবাদিক জাকির হোসেন বলেন, আমি লাইভে ছিলাম। হঠাৎ করেই ছেলেরা আক্রমণ করে। ফোন, বুম কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে।

ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের পরিচালক ব্রি.জে (অব:) ডা. ইফফাত আরা বলেন, শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ করছে ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমরা কলেজ শিক্ষার্থী, মৃত শিক্ষার্থীর পরিবারের সাথে বসেছি। একটি তদন্ত কমিটিও গঠন হয়েছে।

কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ কীভাবে জড়ালো এই প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা জানিনা তারা কীভাবে আসলো। আমারা তাদের কোন হেল্প চাইনি। আসতেও বলিনি।

কেকে/এজে
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

পালিয়েছে গ্রেফতারকৃত সাবেক ওসি শাহ আলম
শমী কায়সারের ব্যাংকের সবধরনের হিসাব তলব
হাত বাড়ালেই মিলছে বাণিজ্য মেলায় নিত্যপন্য
সিলেটে জুয়েলারি দোকান থেকে আড়াইশ ভরি স্বর্ণ চুরির অভিযোগ
যানজটের কারণে জনগণের কাছে বিএনপির দুঃখ প্রকাশ

সর্বাধিক পঠিত

বিমানবন্দরে নিরাপত্তাকর্মীদের মারধর, রক্তাক্ত সেই প্রবাসীকে জরিমানা
গঙ্গাচড়ায় বাংলাদেশ স্কাউটসের ত্রৈ-বার্ষিক কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত
লামায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ২ নেতা গ্রেফতার
মতলব উত্তরে বিএনপি নেতার মৃত্যুতে তানভীর হুদার শোক
তাড়াশ উপজেলা পরিষদ ভবনের ছাদে ইউএনও’র শখের বাগান ‘বিলকুঞ্জ’

প্রিয় ক্যাম্পাস- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝