কৌশলে একই নামের অন্যের চাকরি বাগিয়ে নেওয়া নিয়ে ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মো. গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে রাজশাহীর বাগমারা থানার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের গোলাম রব্বানী আসল দাবি করে তার চাকরি ফেরত পেতে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্টার বরাবর দরখাস্ত দিয়েছেন।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশিদ বরাবর বৈষম্যের শিকার দাবি করে রাজশাহীর মো. গোলাম রব্বানী তার দরখাস্তের মাধ্যমে জানান, তার নামের সঙ্গে হুবহু মিল রয়েছে এমন একজন প্রার্থী ঠাকুরগাঁও জেলার মো. গোলাম রব্বানীকে (বর্তমানে সহযোগী অধ্যাপক, ইতিহাস ও প্রত্নত্তত্ব বিভাগ) জালিয়াতি ও সুকৌশলের মাধ্যমে প্রভাষক পদে যোগদান করানো হয়েছে।
এ বিষয়ে তিনি তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবদুল জলিল মিয়ার সাথে একাধিকবার দেখা করলেও রাজনৈতিক কারণে যোগদানপত্র গ্রহণ সম্ভব নয় বলে জানান উপাচার্য। এমনকি তাকে বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত উল্লেখ করে বলাবলি করেন।
দরখাস্তে তিনি আরো জানান, ১৭ ডিসেম্বর ২০০৯ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক পদে অনুষ্ঠিত নিয়োগ বাছাই বোর্ডে অংশগ্রহণ করেন এবং বাছাই বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তিনি প্রথম হন। ১৯ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের একাদশ তম সভার অনুমোদনক্রমে তাকে ২২ ডিসেম্বর ইতিহাস বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদানের জন্য তার গ্রামের ঠিকানায় নিয়োগপত্র পাঠানো হয়। নিয়োগপত্রে তাকে ১ জানুয়ারির থেকে ৪ জানুয়ারির ২০১০ তারিখের মধ্যে যোগদান করতে বলা হয়। সেই অনুযায়ী তিনি ২ জানুয়ারিতে লালকুঠিস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তৎকালীন রেজিস্ট্রার মহোদয়ের নিকট ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক পদের যোগদানপত্র প্রদান করেন।
১৫ বছর পর পুনরায় নিয়োগ চাওয়ার বিষয়ে আসল গোলাম রব্বানী দাবি করা শিক্ষক বলেন, অনেকেই তাকে আদালতের শরণাপন্ন হতে বললেও তিনি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকায় তা থেকে বিরত থাকেন। তৎকালীন প্রশাসন যেহেতু রাজনৈতিক ভিন্ন মতাদর্শের কারণে তাকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন, তাই বর্তমান রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে নতুন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে সৃষ্ট দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তার আবেদন- দীর্ঘ ১৫ বছর পূর্বে শুধু নামের সাথে মিল থাকার কারণে তার প্রতি যে অন্যায় করা হয়েছে, তার নিয়োগ লাভের মাধ্যমে এর সুষ্ঠু সমাধান চেয়ে তিনি দীর্ঘ ১৫ বছরের সকল প্রাপ্য সুবিধাসহ যোগদানপত্র কার্যকর করার অনুরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।
এছাড়াও রব্বানীর বিরুদ্ধে আটত্রিশ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ বাণিজ্যের স্ক্রিনশট ভাইরাল ও জুলাই বিপ্লবের ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করে ফেসবুক পোস্ট করেন।
এ বিষয়ে বর্তমান শিক্ষকতায় থাকা গোলাম রব্বানীর সাথে দেখা করলে তিনি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আগামীকালের কথা বলে প্রশাসনিক ভবন থেকে দ্রুত বেরিয়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ড. মো. হারুন-অর রশিদ বলেন, আমার কাছে একটি পদের অভিযোগ এসেছে। আমরা আগে যিনি অভিযোগ করেছেন তার বিষয়ে যাচাই-বাছাই করব। তার অভিযোগের সত্যতা কতটুকু আছে তা দেখব। নিয়োগ বোর্ড ও সিন্ডিকেট মিটিং এবং প্রার্থীর ভোটার আইডির ছবি দেখে যদি এ বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায় তবেই আমরা প্রশাসনিক ভাবে ব্যবস্থা নিতে পারব।
কেকে/এমএস