বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সারজিস আলমকে ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় নাগরিক কমিটি বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
বুধবার রাত ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়।
রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতা। পরে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যে এসে সমাবেশ করে তারা।
সমাবেশে সংখ্যা লঘু সমস্যার সমাধানে ৪ দফা দাবিতে দেশের সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধারা বেঁচে থাকতে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে বসবাসরত হিন্দু,মুসলিম,বৌদ্ধ, চাকমা,মারমা সবাই বাংলাদেশি। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রয়োজন হলে প্রত্যেকে জীবন দিয়ে দিবে। তবুও সম্প্রীতির বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার দিকে ঠেলে দেওয়া যাবে না। কোনো অপচেষ্টা করেই বাংলাদেশের মুসলমানদের উস্কে দেওয়া সম্ভব না। বাংলাদেশের মানুষ কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে এক সেকেন্ডের জন্যও প্রশ্রয় দিবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এই বিজয়কে কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত রাখতে হবে। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সমস্যার সমাধানে ৪ দফা দাবিতে দেশের সবাইকে জেগে উঠার আহবান জানাই। প্রথমত বাংলাদেশের হিন্দুদেরকে হিন্দুত্ববাদী প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে।দ্বিতীয়ত,বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি কারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।তৃতীয়ত, গত ১৫ বছরে সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার লঙ্গনে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।চতুর্থত, সংখ্যা লগুদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হিবে।
সর্বোপরি বাংলাদেশের রাজনীতি, কূটনীতি ও ক্ষমতার কাঠামোকে দিল্লির প্রভাবমুক্ত করার আহবান জানান আখতার হোসেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দেশের সার্বভৌমত্বের পাহারাদার যারা তাদেরকে সরিয়ে দিয়ে এ দেশের স্বাধীনতা বিপন্ন করার পরিকল্পনা চলছে।
তিনি বলেন, এই বাংলার মাটিতে দিল্লির ক্রীতদাস হাসিনাকে ভারত টিকিয়ে রাখতে পারেনি। এ দেশের কেউই আর দিল্লির দালালি করবে না। ভারতের শেষ ভরসা ছিল চিন্ময় কৃষ্ণ। এখন তারা একে একে টার্গেট করছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের।
তিনি বলেন, আমরা যেকোনো সময় আমাদের জীবন দেশের স্বার্থে বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত আছি। আমাদের মেরে ফেললে দেশের সার্বভৌমত্ব থেমে যাবে না।
বিক্ষোভ সমাবেশে 'গোলামি না আজাদি,আজাদি আজাদি' 'হিন্দুত্ববাদের কালো হাত,ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও', 'হাসনাত আহত কেন, প্রশাসন জবাব চাই','সারজিস আহত কেন,প্রশাসন জবাব চাই' ইত্যাদি স্লোগান দেয় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য,শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জেয়ারত করে ফেরার পথে বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে চট্রগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি ইউনিয়নের হাজী রাস্তার মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সার্জিস আলমের গাড়ি বহরে ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যা চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
কেকে/এইচএস