শীতেও দেখা নেই বাবুই পাখির
ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪, ৫:৩৬ পিএম (ভিজিটর : ২৩১)
ফাইল ছবি
দেশের এক সময়ের নজরকাড়া বাবুই পাখিকে নিয়ে কবির ‘স্বাধীনতার সুখ’ কবিতাটি আজও মানুষ উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করলেও বাঞ্ছারামপুরে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখি ও তার বাসা। বাবুই পাখির বাসা এখন অনেকটা স্মৃতির অন্তরালে বিলীন হতে চলেছে।
আজ থেকে প্রায় ১৫-১৬ বছর আগেও গ্রাম-গঞ্জে মাঠে-ঘাটের তালগাছে দেখা যেত বাবুই পাখির নিপুণ কারু খচিত বাসা।
সাধারণত শীতের শুরুতে বাবুই পাখি তাদের বাসা বাঁধতে শুরু করে। শুরু হয় প্রজনন প্রক্রিয়া। কিন্তু সেটিরও এখন দেখা মেলা ভার।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলাসহ আশপাশের এলাকার বিভিন্ন গ্রামে এখন আর আগের মতো বাবুই পাখির নজরকাড়া বাসা চোখে পড়ে না। এসব বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই ছিল না, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক জোগাত এবং স্বাবলম্বী হতে উৎসাহিত করত। সময়ের বিবর্তনে ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে এখন ঐ পাখি হারিয়ে যাচ্ছে। দৃষ্টিকাড়া গাছের ঝুড়ির মতো চমৎকার বাসা বুনে বাস করায় এই পাখির পরিচিতি বিশ্বজোড়া। নারিকেল গাছের কচিপাতা, খড়, তালপাতা ও খেজুর গাছের পাতা দিয়ে উঁচু তালগাছে বাসা তৈরি করত বাবুই পাখি। প্রবল ঝড়েও তাদের বাসা ভেঙ্গে পড়ে না। বাবুই পাখির নিখুত বুননে এই বাসা টেনে ছেঁড়াও ছিল কষ্টকর। এজন্য অনেকেই একে তাঁতিপাখি বলেও ডাকে।
উপজেলার ছলিমাবাদ ইউনিয়নের ভুড়ভুড়িয়া গ্রামের লিয়াকত আলী ও আছাদুল ইসলাম জানান, আমাদের মাঠের জমিতে রয়েছে উঁচু তালগাছ। সেখানে ১৫-১৬ বছর আগে বাবুই পাখি বাসা বেঁধে থাকত। আমরা লাঙল চষতে যেতাম আর দেখতাম ছোটো ছোটো পাখি তালগাছের ঝুলন্ত পাতার সঙ্গে নিখুঁতভাবে বাসা বুনে থাকত, যা দেখে খুব ভালো লাগত। তবে এখন তালগাছ আছে, কিন্তু নেই বাবুই পাখির সেই বাসা।
বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দিত শৈল্পিক নিদর্শনকে টিকিয়ে রাখার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার বলে মনে করেন পরিবেশবিদরা।
কেকে/এমএস