কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে এবার পাওয়া যায় ২৯ বস্তা টাকা। দিনভর গণনা করে এবার পাওয়া গেলো রেকর্ড ৮ কোটি ২১লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। এছাড়াও আছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাসহ সোনাদানা।
সাধারণত ৩ মাস পর পর পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খোলা হলেও এবার ৩ মাস ১৪ দিন পর শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে পাগলা মসজিদে দশটি দানবাক্স ও একটি ট্রাংক খোলা হয়।
জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সকাল ৮ টার দিকে দানবাক্স খোলার কাজ শুরু হয়। সবগুলো দানবাক্স থেকে এবার পাওয়া যায় রেকর্ড ২৯ বস্তা টাকা। টাকার বস্তাগুলো মসজিদের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে শুরু হয় গণনা।
পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্স হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও শহরের জামিয়া ইমদাদীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার দুই শতাধিক ছাত্র ও রুপালী ব্যাংকের ৭০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নেন গণনার কাজে। র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় দিনভর টাকা গণনার পর সেগুলো ব্যাংকের হিসাবে জমা রাখা হয়।
জনশ্রুতি আছে, কোনো একসময় একজন আধ্যাত্মিক পাগল সাধকের বাস ছিল কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া ও রাখুয়াইল এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত নরসুন্দা নদীর মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা চরে। ওই পাগল সাধকের মৃত্যুর পর এখানে নির্মিত মসজিদটি পাগলা মসজিদ হিসেবে পরিচিতি পায়।
পাগলা মসজিদে মানত করলে মনের আশা পূর্ণ হয়। এমন ধারণা থেকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ এ মসজিদে দান করে থাকেন। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এখানে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানান, দানের টাকা জমা রাখা হয় মসজিদের নামে খোলা একটি ব্যাংক একাউন্টে। প্রায় ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুতল মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাগলা মসজিদের টাকা নয়ছয় করার কোনো সুযোগ নেই। সুক্ষ্মভাবে প্রতিটি টাকার হিসাব রাখা হয় বলেও জানান তিনি।
সবশেষ গত ১৭ আগস্ট মসজিদের দানবাক্স থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৭ কোটি ২২লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা।
কেকে/এমএস