পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে কুমিল্লাকে নানাভাবে পিছিয়ে রাখা হয়েছিল। কুমিল্লা বাসীর দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়ন। কিন্তু হাসিনা এখানে বিভাগ বাস্তবায়ন করতে দেয়নি। আগামী দিনে কুমিল্লা নামেই কুমিল্লা বিভাগ বাস্তবায়ন করা হবে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেলে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদরের ডিআর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত বিশাল গনসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন, সমবায় এবং যুব ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া।
তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোন ষড়যন্ত্রই আমাদেরকে বিচলিত করতে পারবে না। পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার কোন চক্রান্তই এখন আর কাজে আসবে না। কারণ ছাত্র জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিস্থিতির উপর সজাগ দৃষ্টি রাখছে। অতীতের ফ্যাসিস্ট সরকার নির্দিষ্ট এলাকায় তাদের উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করেছে। কিন্তু আমরা বৈষম্য না রেখে সমগ্র বাংলাদেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করব।
তিনি আরো বলেন, তরুণ প্রজন্মই আগামীর নতুন বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবে। নতুন বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য যার যার জায়গা থেকে প্রস্তুত থাকুন। আমরা যদি নিজেরা নিজেদের জায়গা থেকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করি তাহলে স্বপ্ন একদিন বাস্তবায়ন হবেই। আমি সরকারের সকল বিভাগের সাথে আলোচনা করব এবং খুব দ্রুত কুমিল্লায় বিভাগ বাস্তবায়নের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চেষ্টা করব।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া তার নিজ উপজেলা নিয়ে বলেব, ইতিপূর্বে মুরাদনগরে ২০ টি উন্নয়ন প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। খেলাধুলার উন্নয়নে এ উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হবে। শিক্ষার দিক থেকে মুরাদনগর অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। আমরা মুরাদ নগরের শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করব। আগামী ১০ বছরের মধ্যে মুরাদনগর এ শতভাগ শিক্ষার হার নিশ্চিত করতে হবে। নাগরিক সেবার দিক থেকে মুরাদনগর অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। সকল সেক্টরে দৃশ্যমান উন্নয়ন করা হবে।
এদিকে আসিফ মাহমুদকে এক নজর দেখতে উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার হাজার হাজার মানুষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। নিজ এলাকার গর্বিত সন্তানকে নিয়ে সর্বস্তরের জনতা উচ্ছাস প্রকাশ করেন। উপদেষ্টার গণসংবর্ধনায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি, জামায়াত, হেফাজত, চরমোনাই, গনঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। তাছাড়া সুশীল সমাজ ব্যবসায়ী শিক্ষক সহ নানা শ্রেণী পেশার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকসুদ জাহেদী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, মো. নজরুল ইসলাম, উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. আবুল হাসান, উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়কারী গোলাম কিবরিয়া সরকার, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ হাকিম সোহেল, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম, ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক কাজী জুন্নুন বসরী, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আবু জাহের মুন্সি, মনিরুল হক জজ, উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আমিরুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ মিনহাজুল আবেদীন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নেছার আলম সরকার, ব্রিগেডিয়ার অব নুরুল মোমেন, উপজেলা জামায়াতের আমির আনম ইলিয়াস প্রমুখ।
এর আগে দুপুর ১২টায় তিনি মুরাদনগর উপজেলা পরিষদে উপস্থিত হন। এ সময় গার্ড অব ওনার গ্রহণ করে উপজেলা প্রশাসনের সাথে মতবিনিময় এবং হতদরিদ্র মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। বিকেলে তিনি নিজ গ্রাম উপজেলার আকাবপুরে এলাকাবাসীর সাথে কুশল বিনিময় করেন।
কেকে/এমএস