ভারতে বাংলাদেশি দূতাবাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে( ঢাবি) বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এতে অংশগ্রহণ করেছে জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থীরাও।
সোমবার রাত সাড়ে ৯ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে সমাবেশ করে তারা।
রাত ১০টায় জগন্নাথ হলের একদল শিক্ষার্থী ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মিছিল নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেয়।
বিক্ষোভ মিছিলে 'দূতাবাসে হামলা কেন, দিল্লি তুই জবাব দে','আর এস এসের কালো হাত, ভেঙে দাওগুড়িয়ে দাও', 'বিজেপির কালো হাত ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও',' উগ্রবাদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও,'সারা বাংলায় খবর দে,আগ্রাসনের কবর দে' ইত্যাদি স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।
রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা এবং জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা।
এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন,সমস্ত শহিদের রক্তের শপথ, ভারত কিংবা তার চেয়ে শক্তিশালী কোনো দেশও যদি আমাদের সার্বভৌমত্বের দিকে হাত বাড়ায়, তবে আমরা রুখে দাঁড়াব।
তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেকে বাংলাদেশি। এদেশে বিগত সময়ে যেমন সংখ্যালগু কার্ড খেলে ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিস্তার করা হয়েছে তা আর কখনো হতে দিব না। আমাদের সার্বভৌমত্ব কিভাবে রক্ষা করতে হয় তা আবু সায়েদরা আমদের শিখিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনে হামলার বিষয়ে ভারত যদি ক্ষমা না চায় তবে তাদের মুরগির গলা চেপে ধরব। বিগত সময়ে কাশ্মীর, হাইদ্রাবাদ, মণিপুরে ওরা সংখ্যালগুদের সাথে যে অধ্যায় রচনা করেছে তা ইতিহাসের ন্যাক্কারজনক অধ্যায়। ভারতের এমন আগ্রাসী আচরণ আর বরদাশত করা হবে না।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, ভারতের সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গির কাছে আজ আমাদের স্বাধীনতা বিপন্ন। ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই ইতিহাসের অংশ। আজ ভারত অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে ধর্মীয় লড়াই তৈরি করতে চাইছে। আমরা আমাদের পূর্ব পুরুষদের আগ্রাসনবিরোধী লড়াইয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এই লড়াই চালিয়ে যাব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশরেফা খাতুন বলেন, জন্মের পর থেকে হাসিনাকে দেখেছি ভারতের দালালি করে গেছে। বাংলাদেশের সরকারের নিজ দেশের চেয়ে ভারত নিয়ে ভাবনা বেশি ছিল। সীমান্ত হত্যা, আবরার হত্যাসহ নানা নিপীড়ন দিল্লির আধিপত্য বিস্তারের অংশ ছিল। এদেশের একজন মানুষও যদি বেচে থাকে,তবে দিল্লির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
ভারতকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, প্রতিবেশী হিসেবে থাকলে চাইলে থাকুন,আমাদের ঘরের ব্যাপারে নাক গলাবেন না। আমরা আমাদের ঘর দেখার জন্য জেগে আছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী বলেন,ঐতিহাসিক ভাবে এদেশ বল্গাকপুর নামে পরিচিত। এই বল্গাকপুরবাসী কখনো আগ্রাসন কোনো আগ্রাসন মেনে নেয় না। ভারতকে আমরা নতুন করে সভ্যতা শিক্ষা দিব। যতবার দরকার পড়ে আমরা রক্ত দিব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তারিকুল ইসলাম বলেন, এই বাংলাদেশে কখনো আর শেখ হাসিনা তৈরি হতে দেওয়া হবে না। ভারতে বাংলাদেশের উপ-হাই কমিশনে হামলা চালিয়ে ভারত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এর মাধ্যমে ভারত সকল সম্প্রীতি নষ্ট করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের শিক্ষার্থী জয় পাল বলেন,আমাদের একমাত্র পরিচয় আমরা বাংলাদেশি। আমরা যেকোনো আগ্রাসন এবং ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধ ভাবে রুখে দিব। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা দেশের সার্বভৌত্ব রক্ষায় জীবন দিতে প্রস্তুত আছি।
কেকে /এমএস