নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ২০০ কোরআনের হাফেজকে পাগড়ি পরিয়ে সম্মাননা দেয়া হয়েছে। এসময় ২০০ জন কোরআনের হাফেজ মঞ্চে দাঁড়িয়ে এক সঙ্গে মনোমুগ্ধকর তিলাওয়াত করেন। এমন স্বীকৃতি পেয়ে তাদের চোখে-মুখে ছিল আনন্দের ঝলক।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাতে এমন দৃষ্টিনন্দন আবহ তৈরি হয় বেগমগঞ্জের চৌমুহনী মদন মোহন হাই স্কুল মাঠে।
জানা যায়, মারকাযুল কোরআন ইন্টারন্যাশানাল মাদরাসার আয়োজনে আন্তর্জাতিক ক্বিরাত কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার বিকেলে শুরু হওয়া এতিলাওয়াত চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। এতে অংশগ্রহণ করেন তানজানিয়ার শায়েখ ক্বারী ঈদী শাবান, মিশরের শায়েখ ড. ক্বারী সালাহ মোহাম্মদ সোলায়মান, শায়েখ ক্বারী মুহাম্মদ ছানাদ আব্দুল হামিদ, আফ্রিকার শায়েখ ক্বারী আহমেদ হিজা ও বাংলাদেশের শায়েখ ক্বারী নাজমুল হাসান ও শায়খ ক্বারী আব্বাস উদ্দীন।
তাদের সুমধুর তিলাওয়াতে মুগ্ধ হন শ্রোতা-দর্শকরা। এ সময় ২০০ হাফেজ ছাত্রদের পাগড়ী ও সনদ প্রদান করেন জামেয়া রশীদিয়া মাদরাসা ফেনী প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আল্লামা মুফতী শহিদুল্লাহ। তারপর ২০০জন কোরআনে হাফেজের এক সঙ্গে মনমুগ্ধকর তেলাওয়াতে বিমোহিত হয় অনুষ্ঠানস্থল।
সংবর্ধনা পাওয়া হাফেজ আশরাফুল ইসলাম ও হাফেজ মোহাম্মদ মিনহাজ বলেন, ২০০হাফেজকে এক সঙ্গে বিশাল সংবর্ধনা দেওয়া সহজ কিছু নয়। আমরা অনেক খুশি হয়েছি।
মানযিল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও মানযিল ইন্সটিটিউট এর প্রিন্সিপাল মাওলানা জামাল মাসরুরের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ক্বিরাত কনফারেন্সে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ নোয়াখালীর সভাপতি মাওলানা নিজাম উদ্দিন, হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শায়েখ ক্বারী আবদুল হক, জামেয়া রশীদিয়া ফেনীর সহকারী পরিচালক মুফতী ফয়জুল্লাহ কাসেমী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমান, মারকাজুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার পরিচালক মুফতি আবু ইউসুফ কাসেমী ও হাফেজ কারী মাইনুদ্দীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মানযিল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও মানযিল ইন্সটিটিউটটের প্রিন্সিপাল মাওলানা জামাল মাসরুর বলেন, আমরা হাফেজদের সম্মানকে জাতির কাছে তুলে ধরতেই কোরআন প্রেমিদের জন্য এমন জমকালো কনফারেন্স আয়োজনের পরিকল্পন করি। আল্লাহর কালামের মর্মবাণী মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সর্বাত্মকভাবে কাজ করে যাচ্ছে মারকাযুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসা ও মানযিল ইন্সটিটিউট। যা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা মুফতী শহিদুল্লাহ বলেন, কোরআন মানবতার মুক্তির সনদ। পথহারা মানুষকে আলোর পথ দেখাতে আল্লাহতায়ালা কোরআন নাজিল করেছেন। আজকের অস্থির পৃথিবীতে শান্তির সুবাতাস ছড়িয়ে দিতে হলে আমাদেরকে আবার কোরআনের কাছে ফিরে যেতে হবে। প্রিয় নবী (সা.) এর পদাঙ্ক অনুসরণেই মানবতার মুক্তি ও কল্যাণ।
চৌমুহনী কাছারী বাড়ি জামে মসজিদ খতিব হযরত মাওলানা আবদুল কবিরের সভাপতিত্বে ইয়াছিন হায়দার ও শাহ আইমান জাকির উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে নাশীদ শোনান আহমদ আব্দুল্লাহ, শেখ এনাম ও আবু রায়হানসহ জাতীয় পর্যায়ে সমাদৃত ও দেশে সাড়া জাগানো শিল্পী। ক্বিরাত কনফারেন্সে উলামায়ে ক্বেরাম, বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ প্রশাসনিক ও উচ্চ পর্যায়ের সরকারি-বেসরকারি দায়িত্বশীল এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
কেকে/এমআই