শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫,
২৭ পৌষ ১৪৩১
বাংলা English

শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: ক্ষমতার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় বাড়ছে রাজনৈতিক অনৈক্য      বাড়তি ব্যয় চাপছে ভোক্তার ঘাড়ে, ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরাও      পালিয়েছে গ্রেফতারকৃত সাবেক ওসি শাহ আলম      শমী কায়সারের ব্যাংকের সবধরনের হিসাব তলব      যানজটের কারণে জনগণের কাছে বিএনপির দুঃখ প্রকাশ      লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন      ডিএমপির ১২ ডিসিকে বদলি      
আইন-আদালত
ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি : মিতু হত্যার আসামির অভিযোগ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯:৫১ এএম আপডেট: ০৪.১২.২০২৪ ১০:১৮ এএম  (ভিজিটর : ১৩৫)
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এহতেশামুল হক ভোলা বলেছেন, আমাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করেছে পিবিআই। বাবুল আক্তারই তার স্ত্রী মিতুকে খুন করেছে, এমন বক্তব্য দিতে আমাকে বাধ্য করা হয়েছিল।

রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে বাবুল আক্তার জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন এমন খবর পেয়ে কারা ফটকে এসে এসব কথা বলেন মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এহতেশামুল হক ভোলা। মিতু হত্যায় ভোলা আসামিদের অস্ত্র সরবরাহ করেছেন বলে পিবিআইয়ের অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে।

ভোলা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনিক দ্বন্দ্বের কারণে সাবেক পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার চক্রান্ত করে বাবুল আক্তারকে তার স্ত্রী হত্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন। ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দিন বাজারের বাহার মার্কেটে স্বর্ণের গুদামে থেকে স্বর্ণ উদ্ধার ঘটনা নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। সেদিন অভিযান বন্ধ করতে রাজি না হওয়ায় বাবুলকে মিতু হত্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

এহতেশামুল হক ভোলা বলেন, ‘আমি নির্দোষ’ আমার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন এসি মো. কামরুজ্জামান। পরে পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তাকে অন্তত ১ কোটি টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে। আমাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করেছে পিবিআই। বাবুল আক্তারই তার স্ত্রী মিতুকে খুন করেছে এমন বক্তব্য দিতে আমাকে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা চাই মামলাটির পুনরায় সাক্ষ্য নেওয়া হোক। আমার বিশ্বাস আমরা ন্যায় বিচার পাব, ইনশাআল্লাহ।

‘বাবুল আক্তার কেমন মানুষ ছিলেন?’ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে, উনি খুব সৎ লোক। আমি অনেক আগে থেকে উনাকে চিনি। উনি কোন ঘুষ-টুস নিতেন না। আমি জানি না, উনি এটাতে (মিতু হত্যাকাণ্ড) জড়িত আছেন কি-না, আল্লাহই ভালো জানেন।’

প্রায় তিন বছর সাত মাস কারাগারে থাকার পর গত বুধবার হাইকোর্ট থেকে জামিন পান সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি আলী রেজার হাই কোর্ট বেঞ্চ জামিনের আদেশ দেন।

রোববার সকালে জামিন আদেশের অনুলিপি মিতু হত্যা মামলার বিচারিক আদালত চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে জমা দেয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ওই আদালত থেকে বেইল বন্ড ইস্যু করা হয় বলে জানান বাবুল আক্তারের আইনজীবী কফিল উদ্দিন চৌধুরী।

এরপর বাবুলের মুক্তি হতে পারে এমন গুঞ্জনে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের মূল ফটকের বাইরে জড়ো হন গণমাধ্যমকর্মীরা। সন্ধ্যার দিকে কারাগারের মূল ফটক দিয়ে ভিতরে যান তার বর্তমান স্ত্রী ইসরাত জাহান মুক্তা। তার কিছু সময় পর বাবুল আক্তারের স্ত্রী ইসরাত জাহান মুক্তা কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন।

গত বৃহস্পতিবার বাবুলের জামিন বাতিল চেয়ে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজের আদালতে আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।

এ ব্যাপারে মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, আমার আইনজীবীরা আদালতে বলেছেন, এই মামলায় ৫২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়ে গেছে। এখন প্রধান আসামি জামিনে মুক্তি পেলে সাক্ষীদের ক্ষতি হতে পারে।

মোশাররফ হোসেনের আবেদনটি বিচারপতি মো. রেজাউল হকের চেম্বার আদালতে আজ (রোববার) উত্থাপন করা হয় বলে নিশ্চিত করে মোশাররফের আইনজীবী মো. মনির হোসেন রানা বলেন, আবেদনটির বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ শুনানির পর আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন।

উচ্চ আদালতে বাবুল আক্তারের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, মোশাররফ হোসেনের করা আবেদনের বিষয়ে মঙ্গলবার শুনানি হবে। যেহেতু চেম্বার জজ আদালতে আবেদনটি অপেক্ষমাণ আছে তাই সেটির আদেশ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সে সময়কার চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসপি বাবুল আক্তার ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই চট্টগ্রাম থেকে বদলি হন। তিনি ঢাকায় কর্মস্থলে যোগ দিতে যাওয়ার পরপরই বন্দরনগরীতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

ঘটনার পর টানা সাড়ে তিন বছর তদন্ত করেও ডিবি পুলিশ কোনো কূলকিনারা করতে না পারার পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে ২০২১ সালের মে মাসে পিবিআই জানায়, স্ত্রী মিতুকে হত্যা করা হয়েছিল বাবুল আক্তারের ‘পরিকল্পনায়’। আর এজন্য খুনিদের ‘লোক মারফত তিন লাখ টাকাও দিয়েছিলেন’ বাবুল। পরে বাবুলের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয় এবং মিতুর বাবা আরেকটি মামলা করেন।

তবে মিতুর বাবার করা সেই মামলা আদালতে না টেকার পর বাবুলের মামলাটিই আবার পুনরুজ্জীবিত হয়। ২০২১ সালের মে মাসে পিবিআই এর হাতে গ্রেপ্তার হন বাবুল। ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। তাতে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। এরপর ওই বছরের ১০ অক্টোবর সেই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। গত বছরের ৯ এপ্রিল মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনের সাক্ষ্যের মধ্যে দিয়ে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

মিতু হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলাটি বর্তমানে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিনের আদালতে বিচারাধীন। মামলার ৯৭ জন সাক্ষীর মধ্যে মিতুর মা শাহেদা মোশাররফসহ মোট ৫২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এর মধ্যে বাবুল আক্তার গত ১৪ অগাস্ট চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন। বিচারক তা নাকচ করে দিলে তার আইনজীবীরা হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।

কেকে/এএম

আরও সংবাদ   বিষয়:  মিতু হত্যা   পিবিআই  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

জাল টাকার নোট দিয়ে পান-সিগারেট কিনতে গিয়ে আটক যুবক
জীবননগর সীমান্তে ৬৬লক্ষ টাকার ইয়াবা উদ্ধার
নিপুণকে সিলেট বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিল পুলিশ
অভিনেত্রী নিপুণকে সিলেট বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদ
তীব্র শীতে কাপছে চুয়াডাঙ্গা, সর্বনিম্ন ৮.৫ ডিগ্রি

সর্বাধিক পঠিত

নিপুণকে সিলেট বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিল পুলিশ
লামায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ২ নেতা গ্রেফতার
পালিয়েছে গ্রেফতারকৃত সাবেক ওসি শাহ আলম
গঙ্গাচড়ায় বাংলাদেশ স্কাউটসের ত্রৈ-বার্ষিক কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত
বিদ্যুৎ না থাকলেও মিটারে বেশি বিল আসার কারণ জানাল বিএন্ডটি

আইন-আদালত- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝