ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং মাদরাসা পড়ুয়া ৭৫ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এই চিঠি বিতরণ কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো অভিভাবকদের সন্তানদের শুধু পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিচার না করে, তাদের সম্ভাবনা ও প্রতিভার বিকাশে সহায়তা করা।
ইউএনও তার চিঠিতে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে লিখেন, আপনার সন্তানের বার্ষিক পরীক্ষা ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। প্রতিটি বাবা-মায়েরই আশা থাকে, তার সন্তান ভালো রেজাল্ট করবে এবং ক্লাসের ‘টপার’ হবে। কিন্তু যদি আপনার সন্তান পরীক্ষায় ভালো ফলাফল না পায়, তবে অনুগ্রহ করে তার ওপর বিশ্বাস রাখুন এবং তাকে সমর্থন দিন। তাকে আশ্বস্ত করুন, সে তার নিজের সক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাসের ওপর আস্থা রাখুক। তাকে বুঝিয়ে বলুন, পরীক্ষার নম্বর কোনো বড় বিষয় নয়, এটি কেবল একটি ক্লাস পরীক্ষা, জীবনের নানা পথের মধ্যে এটি শুধুই একটি ধাপ। ভবিষ্যতে তাকে আরও অনেক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, সন্তানকে শুধুমাত্র পরীক্ষার ফলাফলের মাধ্যমে বিচার করা উচিত নয়। প্রতিটি শিশুই বিভিন্ন ধরনের সুপ্ত প্রতিভা ও গুণাবলির অধিকারী। এই গুণাবলীকে সঠিকভাবে বিকশিত করার জন্য অভিভাবকদের তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করা উচিত। তাদের পরিশ্রম, সৃজনশীলতা, এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের সুন্দর ভবিষ্যত গঠনে সহায়তা করুন।
ইউএনও সারমিনা সাত্তার গণমাধ্যমে জানান, আমাদের অধিকাংশ অভিভাবকের কাছে পরীক্ষার ফলাফল অনেক বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, জীবনে সফলতা শুধুমাত্র পরীক্ষার রেজাল্টের ওপর নির্ভরশীল নয়। প্রতিটি শিশু বিশেষ ধরনের প্রতিভা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, এবং অভিভাবকদের দায়িত্ব হলো তাদের সেই প্রতিভা সঠিকভাবে চিহ্নিত করা ও বিকাশের সুযোগ প্রদান করা।
তিনি আরও বলেন, এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো অভিভাবকদেরকে বুঝানো যে, সন্তানের শিক্ষা শুধুমাত্র পরীক্ষার ফলাফল নয়, বরং তার প্রতিভার বিকাশ, আত্মবিশ্বাস এবং সৃজনশীলতা বিকাশের মাধ্যমেও সফলতা অর্জন করা সম্ভব।
ইউএনও সারমিনা সাত্তার জানিয়েছেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তর থেকে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসংখ্যা অনুযায়ী খোলা চিঠি প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোতে, এবং প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে এই চিঠি তাদের অভিভাবকদের কাছে পৌঁছে দেবে।
ঈশ্বরগঞ্জের অভিভাবকদের জন্য এই খোলাচিঠি তাদের সন্তানদের প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কেকে/এএম