“উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রজাপতি সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো ১৪ তম প্রজাপতি মেলা। মেলা ঘিরে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস।দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো প্রজাপতিপ্রেমী ছুটে আসেন ক্যাম্পাসে।
শুক্রবার (৬ই ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের কীটতত্ত্ব শাখার আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তন প্রাঙ্গণে প্রজাপতি উড়িয়ে দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান।
মেলার আয়োজনকে ঘিরে শিশু-কিশোরদের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। হরেক রকমের প্রজাপতির ওড়াওড়ি শিশু-কিশোরদের মনে গভীর আলোড়ন সৃষ্টি করে। মেলায় প্রায় ৭০ টির প্রজাতির প্রজাপতি প্রদর্শন করা হয়।
সাভার থেকে বাবার সঙ্গে মেলা দেখতে এসেছেন ছোট রাইসা। ছবি আঁকা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে এবং পাপেট শো দেখে খুবই উচ্ছ্বসিত দেখা যায় তাকে। দিনব্যাপী নানা আয়োজনে আমন্ত্রিত অতিথিরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
মেলার আহ্বায়ক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রজাপতি এই পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পরাগায়নের মাধ্যমে প্রজাপতি পরিবেশ ও প্রকৃতি এবং বনাঞ্চল রক্ষায় ভূমিকা রাখছে। প্রজাপতিসহ বিভিন্ন পতঙ্গ আমাদের বাস্তুসংস্থান টিকিয়ে রেখেছে। তিনি প্রজাপতি রক্ষায় এর বাসযোগ্য পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং প্রজাপতিসহ সকল পতঙ্গ টিকিয়ে রাখতে জীব-বৈচিত্রের সাথে সমন্বয় করে দ্রুত মাস্টারপ্ল্যান কার্যকরের দাবি জানান তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, প্রজাপতির কাছ থেকে মানুষের শেখার আছে। প্রজাপতি পরাগায়ণের মাধ্যমে কোনো প্রকার ক্ষতি ছাড়াই আমাদের জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ধর্ম, বর্ণ এবং বৈচিত্র্যেভেদে মানুষের কাছেও সকল মানুষ নিরাপদ হতে হবে। প্রজাপতির কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে গোটা বিশ্বকে নিরাপদ রাখার শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে মানুষকে। সকল ষড়যন্ত্র থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে হবে। প্রকৃতির সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাসুদ, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের অধিকর্তা মুকিত মজুমদার বাবু, বন বিভাগের বণ্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক মো: ছানাউল্যা পাটওয়ারী এবং আরণ্যক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি মুরাদ বিন আজিজ প্রমুখ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বাটারফ্লাই মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড, পরিবেশ সংরক্ষণে বিশেষ অবদানের জন্য বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড, বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড সহ কয়েকটি ক্যাটাগরিতে পুরষ্কার প্রদান করা হয়।
কেকে/এইচএস