নাটোরের সিংড়ায় বিএনপির জনসভার মঞ্চে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালিকা ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টির উপস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপার শুরু হয়েছে।
এ ঘটনায় সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনুকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বশরীরে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জেলা বিএনপি।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) কারণ দর্শানোর নোটিশটি দেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ।
এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টায় সিংড়া কোর্ট মাঠে উপজেলা বিএনপির জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক উপমন্ত্রী ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।
ওই জনসভায় সভাপতিত্ব করেন সিংড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু। আনু সম্পর্কে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলকের চাচা শ্বশুর এবং ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি তারই ভাতিজি।
এ নিয়ে খোদ বিএনপির মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে। ফারজানা রহমান দৃষ্টি বিগত দিনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায় পলকের স্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন এবং পলকের আস্থাভাজন হওয়ায় শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকে ইয়ং বাংলার অ্যাওয়ার্ড ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনির কাছ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের অ্যাওয়ার্ড ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের কাছ থেকে জয়ীতা অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন। তার বাবা আনিসুর রহমান সিংড়া দমদমা কলেজের প্রভাষক।
এ ঘটনায় বিএনপির এক কর্মী কুরবান তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, সিংড়া বিএনপির জনসভার মঞ্চে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শালী, সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনুর ভাতিজি যুব মহিলা লীগের নেত্রী বিএনপির মঞ্চে, তাহলে কি এরাই আগামী দিনের বিএনপি?
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক কর্মী জানান, ১৫ বছর ধরে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলকের সমস্ত সুবিধা নিয়েছেন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আনোয়ারুল ইসলাম আনু। এখন যুব মহিলা আওয়ামী লীগ করা সত্ত্বেও তার ভাতিজিকে মঞ্চে নিয়ে এসেছেন দল ভারি করতে। এ বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে আবেদন, এসব সুবিধাবাদী নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার।
তবে এ বিষয়ে ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি বলেন, সামাজিক কাজ করতে গিয়ে অনেকের সঙ্গে মিশতে হয়। তিনি যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন না বলেও দাবি করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু জানান, ডাক্তার ফারজানা রহমান তার ভাতিজি হলেও তিনি কখন মঞ্চে উঠে পেছনে আসন গ্রহণ করেছেন তা তিনি লক্ষ্য করেননি। ফারজানা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত নেই। নেতাকর্মীরা তাকে মঞ্চে উঠতেও নিষেধ করেছেন। জনসভা শেষ করার পরে বিভিন্ন নেতাকর্মীর কাছে ডা. ফারজানা রহমানের মঞ্চে আসন গ্রহণ করার খবরটি জানতে পেরেছেন।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ জানান, এ ঘটনার জন্য কেন আনোয়রুল ইসলাম আনুর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এই মর্মে ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক অধ্যক্ষ আনারুল ইসলাম আনুকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গ্রহণযোগ্য কোনো কারণ দর্শাতে না পারলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেকে/এইচএস