বেকার যুবকদের অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড ও উন্নত দেশে পাঠানোর নামে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দেওয়ান সাররাত সালাম ওরফে সোয়ানকে গ্রেফতার করেছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, তার বিরুদ্ধে বিদেশে লোক পাঠানোর নামে প্রতারণার অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।
এদিকে মামলা সূত্রে জানা যায়, আজোয়া ওভারসিজ ও আজোয়া ট্যুরস এ্যান্ড ট্রাভেলসের মালিক অভিযুক্ত দেওয়ান সাররাত সালাম ওরফে সোয়ান অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর নাম করে তারেক, এমমদাদুল হক নাইম ও এনামুল হক নামের তিন যুবকের কাছ থেকে ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে নয় লক্ষ টাকা আদায় করে। তাদের মতো এমন ১৮ জনের কাছ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় এক কোটি পঁচিশ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে আহাদ নামের এক ব্যাক্তিকে আয়ারল্যান্ডে পাঠানোর নাম করে ভুয়া ভিসা প্রদান এবং আহাদের পাসপোর্ট আটকে রাখারও অভিযোগ পাওয়া গেছে অভিযুক্ত দেওয়ান সাররাত সালাম ওরফে সোয়ানের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার ছয় মাস পার হয়ে গেলেও তাদেরকে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর কোন পদক্ষেপ না নিয়ে আজোয়া ওভারসিজের মালিক প্রতারক সোয়ান উল্টো সুরমা পিটিওয়াই লি. নামক ভুয়া কোম্পানির প্যাড দেখিয়ে তাদেরকে কোম্পানির ৫% শতাংশ শেয়ারের অংশীদার করে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর আশ্বাস দেয়। বিষয়টি বিদেশ যেতে ইচ্ছুক ওই যুবকদের সন্দেহ হওয়ায় তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে- দেওয়ান সাররাত সালাম ওরফে সোয়ানের ওই অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানিটিই ভুয়া।
মামলার বাদী ভুক্তভোগী তারেক প্রতিবেদককে জানায়, গেল কয়েক মাস ধরেই আমরা দেওয়ান সাররাত সালাম ওরফে সোয়ানের অফিসে আসা-যাওয়া করছি। দেখলাম আমাদের মতো অনেকের কাছ থেকেই সে টাকা নিয়ে ঘোরাচ্ছে। সবশেষ গেল ৪ ডিসেম্বর সে উত্তরার অফিস ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। বিষয়টি বুঝতে পেরে আমরা আইনের দারস্থ হই।
এনামুল নামের অপর ভুক্তভোগী বলেন, আমাদের তিনজনের কাছ থেকে সে মোট আঠার লক্ষ টাকা চেয়েছে। আমরা ৯ লক্ষ টাকা ইতিমধ্যে তার ব্যাংক একাউন্টে জমা দিয়েছি। কিন্তু, ছয় মাসেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও আমাদেরকে না পাঠিয়ে উল্টো ঘুরাচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের দাবি, আদালতের কাছে একটাই প্রার্থনা- যেন আমাদের মতো বেকার যুবকদের টাকা ওই প্রতারক কোনভাবেই আত্মসাৎ করতে না পারে। আদালতের মাধ্যমে আমরা আমাদের কষ্টার্জিত টাকা ফেরত পাই।
এ ব্যাপারে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আসামিকে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা তার বিরুদ্ধে রিমান্ড চাইব।
কেকে/এমআই