সিরিয়ার বিদ্রোহীদের প্রবল চাপের মুখে অবশেষে রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে নিজস্ব বিমানে করে তিনি দেশ ত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় টানা ৫৩ বছরের আল-আসাদ পরিবারের শাসন শেষ হলো।
২০১১ সালে প্রথম বাশারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমেই ২০২৪ সালে শেষ সময়ে এসে সিরিয়ায় অবসান হলো আসাদ রাজত্বের।
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের ১৩ বছরে প্রাণ হারিয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ। বাস্তুচ্যুত হয়েছে কোটি কোটি মানুষ। এই সংঘাত পুরো দেশকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে। ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার বিবরণ:
মার্চ ২০১১
দামেস্ক এবং দারা শহরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়। কিন্তু বাশার আল-আসাদের সরকারের দমন-পীড়নের ফলে তা সহিংস বিদ্রোহে পরিণত হয়।
জুলাই ২০১২
আলেপ্পো শহরে সংঘর্ষ তীব্র হয়। এসময় বিরোধী বাহিনী শহরের বড় অংশ দখল করে নেয়। চার বছর পর সিরিয়ান সেনাবাহিনী শহরটি পুনর্দখল করে।
আগস্ট ২০১৩
সিরিয়ার পূর্ব ঘৌটায় রাসায়নিক অস্ত্রের হামলায় শত শত সাধারণ নাগরিক নিহত হয়। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র নিন্দার মুখে সিরিয়া তাদের রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করতে সম্মত হয়।
জুন ২০১৪
ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ট (আইএসআইএল) সিরিয়া ও ইরাকের বড় অংশ দখল করে খিলাফত ঘোষণা করে। রাক্কা শহরকে সিরিয়ায় তাদের কার্যত রাজধানী বানায়। ২০১৯ সাল পর্যন্ত তাদের শাসন চলে।
সেপ্টেম্বর ২০১৫
রাশিয়া সিরিয়ার সরকারকে সমর্থন জানিয়ে সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ শুরু করে। রুশ বিমান হামলা সরকারপন্থী বাহিনীর পক্ষে যুদ্ধের গতি পরিবর্তন করতে বড় ভূমিকা রাখে।
এপ্রিল ২০১৭
যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার খান শেইখুনে রাসায়নিক অস্ত্র হামলার জবাবে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এটি আসাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রত্যক্ষ সামরিক অভিযান।
নভেম্বর ২০২৪
গত চার বছর ধরে সংঘাত অনেকটা স্থবির অবস্থায় থাকলেও, গত সপ্তাহে সিরিয়ান সরকারের বিরুদ্ধে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় আক্রমণ শুরু করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী। হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নামের একটি ইসলামিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়। অপ্রত্যাশিত এই আক্রমণের মাধ্যমে তারা সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে এবং দেশটির সেনাবাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করেছে। এবং সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। সূত্র: আল জাজিরা
কেকে/এআর