প্রকাশ: রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬:৪৫ পিএম (ভিজিটর : ১৮৬)
ছবি: প্রতিনিধি
গত ৩ নভেম্বর শরিয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতু রক্ষা বাঁধের ১০০ মিটার অংশ ধসে পড়ে। তবে এক মাস পেরিয়ে গেলেও ধস ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। এখনো বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) একে অপরের উপর দায়িত্ব চাপিয়ে চলেছে, ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ।
পাউবোর জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০-১১ অর্থবছরে পদ্মা সেতু প্রকল্পের আওতায় ১১ কিলোমিটার উজানে এবং ২ কিলোমিটার ভাটিতে নদীশাসন কাজ সম্পন্ন করা হয়। বাঁধটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল বিবিএ’র, কিন্তু গত ৩০ জুন পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত ঘোষণা করার পরও সেতু কর্তৃপক্ষ এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডে হস্তান্তর করেনি।
৩ নভেম্বরের ধসের পর বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও এখনও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
বিবিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেতু প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর বাঁধ রক্ষায় তাদের কোনো দায় নেই, যা এখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্ব। অপরদিকে, পাউবো বলছে, বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ দায়িত্ব তাদের কাছে হস্তান্তর হয়নি, ফলে তারা কিছু করতে পারছে না।
এ অবস্থায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। মানববন্ধনে পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় বাসিন্দা অংশ নেয়। তারা জানিয়েছে, ধসের কারণে প্রায় পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
মাঝিরঘাট বাজারের ব্যবসায়ী বাদশা শেখ বলেন, ধস ঠেকাতে কেউ এগিয়ে আসছে না। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আমাদের বাজার ও পদ্মাসেতু ঝুঁকিতে পড়বে।
স্থানীয় বাসিন্দা জলিল তালুকদার বলেন, বাঁধের পাশে আমাদের বসতবাড়ি। প্রতিটি রাত কাটছে দুশ্চিন্তায়, অথচ কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বলেন, ধসে পড়া স্থানটি বিবিএ'র নদী শাসনের আওতাভুক্ত। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তাদেরই। আমরা গত বছর বিবিএ’র কাছে চিঠি দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা রাজি হয়নি। এখন তারা আমাদের ব্যবস্থা নিতে বলছে, তবে আমাদের কোনো বরাদ্দ না থাকায় কিছু করতে পারছি না।
এ বিষয়ে বিবিএ’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. শারফুল ইসলাম সরকার বলেন, ধসে পড়া স্থানটি আমাদের অধিগ্রহণ এলাকার বাইরে। সেখানে পাউবো কাজ করে, আমরা চিঠি দিয়েছি। এখন তাদের দায়িত্ব।