ভারতের শাসকগোষ্ঠী বিদ্বেষপরায়ণ ও বাংলাদেশবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ওরা বিদ্বেষপরায়ণ, বাংলাদেশের মানুষকে পছন্দ করে না, ওরা বাংলাদেশবিরোধী। ভুটান তাদের (ভারত) সঙ্গে নেই, নেপাল নেই, পাকিস্তান তাদের সঙ্গে নেই, শ্রীলঙ্কা নেই, ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপও তাদের সঙ্গে নেই। কেউ ওদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে পারে না।
রোববার ( ৮ ডিসেম্বর ) সকালে ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ পদযাত্রা কর্মসূচির উদ্বোধনকালে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা, কলকাতায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা, সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা উসকে দেওয়ার ষড়যন্ত্রসহ বেশ কয়েকটি ঘটনার প্রতিবাদে ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে এই পদযাত্রা হয়। পদযাত্রাটি রামপুরা ব্রিজের কাছে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দিলে সেখান থেকে একটি প্রতিনিধিদল হাইকমিশনে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়ে আসে।
পদযাত্রা শুরুর আগে রিজভী বলেন, আমি ভারতের শাসকগোষ্ঠীকে বলি, আপনারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা বলছেন… আমি তো দেখলাম এখানে ইসকন সমর্থকদের দ্বারা একজন আইনজীবী মারা গেলেন… তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হলো। আপনাদের ওখানে যে শুভেন্দুসহ যারা আছেন তারা তো এ ব্যাপারে একটা কথাও বললেন না, আওয়াজ পর্যন্ত তুললেন না। মারা গেল তো বাংলাদেশের মানুষ, তিনি মুসলিম, একজন আইনজীবী, তাকে মেরে ফেলা হলো। কোনো কথা নেই। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে দিল্লি থেকে কলকাতা পর্যন্ত মিথ্যা কথা ছড়িয়ে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে লাভ হবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সেখানে গেলে ডলার খরচ হতো, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচারও হতো। আমাদের ডলার এখন সেখানে যাবে না। ভারত থেকে ভোগ্যপণ্য আমদানি বন্ধ হলে বাংলাদেশের মানুষ আরও শ্রম দিয়ে সেসব পণ্য উৎপাদন করবে।
রিজভী বলেন, এই পদযাত্রা একটি অন্যায় প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী শক্তির। যারা এই পদযাত্রায় শামিল হয়েছেন তাদের বুকের মধ্যে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দ্রোহের আগুন জ্বলছে।
তিনি বলেন, এই প্রতিবাদ হবে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল। কারণ পার্শ্ববর্তী দেশ প্রতি মুহূর্তে নাশকতার চেষ্টা চালাবে। তাদের ঔদ্ধত্য এমন পর্যায়ে গেছে যে তারা চট্টগ্রামকে ভারতের অংশ বলে দাবি করবে বলেছে।আমরা আমাদের মিলিত শক্তি, তারুণ্যের শক্তি নিয়ে এটাই বলব, তোমরা চট্টগ্রাম দাবি করবে কী কারণে? এই সমস্ত ফাঁপা, ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে কিছু হবে না। তোমরা যদি এটা দাবি করতে পারো তাহলে আমরাও দাবি করব সিরাজউদ্দৌলার বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা ফেরত দাও আমাদেরকে।
রিজভী বলেন, নানা অপ্রচার-অপতথ্য দিয়ে ভাসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কী লাভ তাতে? কলকাতার নিউ মার্কেট বন্ধ, ডিপার্টমেন্ট স্টোর বন্ধ, কলকাতার হাসপাতালে রোগী নাই, ক্লিনিকগুলো বন্ধ… এতে আপনাদের আনন্দ হতে পারে। আমাদের এখানে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
রিজভী আরও বলেন, আমরা একেবারে অবলম্বনহীন নই। আমরা বাংলাদেশের মানুষ আমরা সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে জানি। আমরা আমাদের দেশকে রক্ষা করার জন্য আকাশ, পাতাল, ভূমি, পানি প্রত্যেকটি জায়গায় আমাদের শক্তি। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর শক্তিও কম নয়… ১৮ কোটি মানুষের শক্তি। আমরা প্রত্যেক দিক থেকে দিল্লির আগ্রাসনকে প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছি।
যুব দলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে ও ছাত্র দলের সাধারণ নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানি, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, যুব দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্র দলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বক্তব্য রাখেন।
কেকে/ এইচএস