তখনও ভোরের আলো ফোটেনি। একই রঙের সু-টিশার্ট পড়ে সবাই হাজির উপজেলা পরিষদ চত্বরে। তাদের একজনের হাতে জাতীয় পতাকা। উপলক্ষ্য ঈশ্বরগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর। রক্ত ঝরা সেই উত্তাল দিনে ঈশ্বরগঞ্জের দামাল ছেলেরা মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করার দীপ্ত শপথ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে। একাত্তরে পাকহানাদার, রাজাকার ও আল-সামসদের হাতে প্রাণ দেন ৭ মুক্তিযোদ্ধা।
সম্মুখযুদ্ধে শহিদ হয়েছিলেন, বীর মুক্তিযাদ্ধা শামছু, মান্নান, আনোয়ার, তাহের, মতিউর, আ. খালেক ও হাতেম আলী।
দিবসটি উপলক্ষে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৭ টার দিকে ৭জন শহিদের স্বরণে নয়জন তরুণ-তরুণী ৯ কিলোমিটার ম্যারাথনে অংশ নেয়।
ম্যারাথন দৌড় শুরু হয় ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে। ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়ক হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ-নেত্রকোনা সড়ক ধরে এগুতে থাকে ম্যারাথন দল। প্বার্শ্ববর্তী গৌরীপুর উপজেলার তেলেহাটি বাজার অতিক্রম করে পুনরায় ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা চত্বরে এসে ম্যারাথন দৌড় শেষ হয়। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার ওই ৯জনকে বরণ করেন। অংশ নেওয়া ওই ৯জন তরুণ-তরুণী ম্যারাথনে উড়ানো জাতীয় পতাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার হাতে তুলে দেন।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসানের নেতৃত্বে শহিদদের স্বরণে ম্যারাথনে অংশ নেন উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দেশ রূপান্তরের প্রতিনিধি মো. এহছানুল হক, দেশের কণ্ঠ প্রতিনিধি ফয়সল আহমেদ, উপজেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল আলম, কোষাধ্যক্ষ ইসহাক মিয়া, প্রিয়াংকা শ্রাবণী, এনামুল হক, ফয়সাল আহমেদ খান সিয়াম।
পরে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতার সম্মেলন কক্ষে ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারীদের হাতে উপহার তুলে দেন ইউএনও সারমিনা সাত্তার। এসময় উপস্থিত ছিলেন, পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইকবাল হোসাইন। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের প্রতিনিধি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকতাবৃন্দ, স্থানীয় সুশীল সমাজের লোকজন ও সাংবাদিকবৃন্দ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার বলেন, ৯ ডিসেম্বর ঈশ্বরগঞ্জ পাক হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহিদদের স্বরণে ৯ জন তরুণ-তরুণী ৯ কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড়ে অংশ নিয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি প্রশংসার দাবিদার।
কেকে/এমআই