লক্ষ্মীপুরে বিএনপির তিনটি ইউনিটের আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশ করা হয়েছে। সম্মেলন, ত্যাগীদের মূল্যায়ন ছাড়াই কমিটির অনুমোদন দেওয়ায় দলীয় নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাতে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু তার ফেসবুক আইডি থেকে কমিটিগুলোর তালিকা প্রকাশ করেন। এই তিনটি ইউনিট হলো লক্ষ্মীপুর সদর (পশ্চিম), রায়পুর উপজেলা এবং রায়পুর পৌর ইউনিট। কমিটির গঠন নিয়ে অনেকের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে, বিশেষত দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য কাজ করা নেতাদের মধ্যে।
দলের দীর্ঘদিনের সভাপতি মনিরুল ইসলাম হাওলাদার সামাজিক গণমাধ্যমে একটি পোস্টে অভিযোগ করেছেন যে, কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। তিনি বলেন, আমি ৩৭ বছর ধরে দলের কর্মকাণ্ডে ছিলাম এবং ফ্যাসিবাদী সরকারের সময়েও দলের জন্য কাজ করেছি, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, যারা কখনো দলের কাজে অংশ নেয়নি, তাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি আরও জানান যে, দল পরিচালনা করতে গিয়ে তার বাসায় হামলা ও ভাঙচুরের শিকার হন এবং দীর্ঘদিন কারাবরণ করতে হয়।
মনিরুল ইসলাম হাওলাদার তার পোস্টে দাবি করেন, আমি নিজ খরচে দলের নেতাকর্মীদের মামলায় সাহায্য করেছি এবং বিপদে সবসময় তাদের পাশে ছিলাম, কিন্তু এখন যাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা কখনও দলের কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিল না। তবুও তিনি দলের স্বার্থে নতুন কমিটির সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং আশা প্রকাশ করেছেন যে, কমিটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি কাউন্সিল উপহার দেবে, যা দলের কার্যক্রমকে আরও সুসংগঠিত করবে।
দলীয় সূত্র জানায়, লক্ষ্মীপুর সদর (পশ্চিম) ইউনিটের ৫৮ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে আব্দুল করিম ভূঁইয়া মিজানকে আহ্বায়ক ও কামরুজ্জামান সোহেলকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। রায়পুর উপজেলা ইউনিটের ৫৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে জেড এম নাজমুল ইসলাম মিঠুকে আহ্বায়ক ও সফিকুর রহমানকে সদস্য সচিব মনোনীত করা হয়েছে। রায়পুর পৌর ইউনিটের ৪৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে আবদুল জিলানীকে আহ্বায়ক ও সফিকুল আলম আলমাসকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
এই কমিটি গঠন প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাসিবুর রহমান জানিয়েছেন, নতুন কমিটি দলের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করবে এবং তৃণমূল পর্যায়ে রাজনৈতিক কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।
তিনি জানান, আগামী নির্বাচনের জন্য দলীয় কার্যক্রম আরও জোরদার করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে তিনি এই কমিটির প্রতি সম্পূর্ণ সমর্থন জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে, কমিটি দলীয় নীতিমালা ও কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবে, যাতে স্থানীয় কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
কেকে/এএম