নাটোরের ভাষা সৈনিক ফজলুল হক (৮৬) মারা গেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
১৯৩৮ সালে নাটোরের সিংড়া উপজেলার দমদমা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ফজলুল হক। তিন মেয়ে ও এক ছেলের জনক ফজলুল হক নাটোর শহরের কান্দিভিটা এলাকায় বসবাস করতেন।
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে শুরু হয় তুমুল আন্দোলন। ৫২’র ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ছাত্র-জনতা। শাসকগোষ্ঠী ভাষার দাবিতে মিছিলরত ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে সালাম, রফিক, শফিক, বরকতসহ বেশ কয়েকজন মারা যান। তখন সেই সংবাদ এসে পৌঁছালে নাটোরের ছাত্র-জনতা মায়ের ভাষা রক্ষায় রাস্তায় নেমে পড়েন। তখন সামনের সারিতে ছিলেন নাটোরের কিশোর ফজলুল হক। সেই সময়কার জিন্না স্কুলের (বর্তমানে সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়) নবম শ্রেণির ছাত্র ক্লাস ক্যাপ্টেন ফজলুল হক ভাষার জন্য তার স্কুলের সকল ছাত্রকে সংগঠিত করেন।
তারপর সবাই মিলে মিছিল সহকারে শহরের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যান। সেখান থেকে ঐ স্কুলের ছাত্রীদের নিয়ে চলে যান মহারাজা জে.এন উচ্চ বিদ্যালয়ে। পরে তিনটি স্কুলের সব শিক্ষার্থী মিলে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ এই শ্লোগান দিয়ে শহরে মিছিল ও সমাবেশ করেন। এজন্য হুলিয়া মাথায় নিয়ে দিনের পর দিন পালিয়ে বেড়াতে হয়েছিল ফজলুল হককে। প্রয়াত দুই ভাষাসৈনিক মাইদুল ইসলাম এবং দৌলতজ্জামান দৌলার পর না ফেরার দেশে চলে গেলেন ফজলুল হক। তার মৃত্যুর সাথে সাথে নাটোরে আর কোন জীবিত ভাষা সৈনিক থাকলো না।
মঙ্গলবার বাদ জোহর নাটোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ফজলুল হকের জানাযা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার।
কেকে/এআর