কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে চলন্ত পিকআপ ভ্যান থামিয়ে দুজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ৭টি গরু ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহসড়কের সদকী ইউনিয়নের ফুলতলা মৎস্য হ্যাচারীর সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর থানার পাচড়া এলাকার কুদ্দুস শেখের ছেলে জনি শেখ (৩৬) ও হোচেন শেখের ছেলে হৃদয় হোসেন (৩৩)। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন চিকিৎসক।
এ ঘটনায় পিকআপ ভ্যান চালক মো. সজিবকে (৩৪) সন্দেহ করছেন গরুর মালিক নাজমুল। সজিব দিনাজপুরের রুস্তমপুর এলাকার গোলাম মোস্তফার ছেলে। তাকে কুমারখালী থানায় রাখা হয়েছে।
এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর রাতে একই সড়কের চাপড়া ইউনিয়নের দবিরমোল্লা গেট এলাকা থেকে চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে এবং পিকআপ ভ্যান থামিয়ে মারধর করে রিপন শেখ নামে এক খামাড়ির পাঁচটি গরু ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। তিনি ফরিদপুরের ভাঙা থানাধীন চকিঘাটা এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ ও এক ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গোপালগঞ্জের খানদার পাড়ার কালাম শেখের ছেলে নাজমুল (৩১) এবং পাচড়া এলাকার জনি শেখ ও হৃদয় হোসেন দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জ পশুহাট থেকে গত মঙ্গলবার বিকেলে প্রায় তিন লাখ ৭৬ হাজার টাকা মূল্যের আটটি গরু কিনেন। ভাড়ায় চালিত পিকআপ ভ্যানে (ঢাকা মেট্রো ন-১২-০২২৫) বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে চার-পাঁচজন ডাকাত পিকআপের সামনে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে তাদের গতিরোধ করে। এরপর ডাকাতরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গরুর মালিক জনি ও হৃদয়ের কাঁধে-পিঠে এলোপাতাড়ি কোপ শুরু করে। তা দেখে অপর গরু মালিক নাজমুল ভয়ে মাঠের মধ্যে দৌড়ে পালিয়ে যায় এবং ৯৯৯-এ কল দেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভিকটিমদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ততক্ষণে ডাকাতদল ৭টি গরু নিয়ে পালিয়ে যান। তবে চালক সজিবকে কোনো আঘাত করেনি ডাকাতরা।
আজ সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, থানা চত্বরে রাখা রয়েছে জব্দকৃত পিকআপ ভ্যানটি। ভ্যানের ওপরে রয়েছে উদ্ধারকৃত লাল রঙের একটি গরু।
গরু মালিক নাজমুল বলেন, জনি ও হৃদয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রথমে কুমারখালী পরে কুষ্টিয়া হাসপাতাল এবং সর্বশেষ তাদের ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। তারা এখন গাড়িতে ঢাকার পথে।
তার ভাষ্য মতে, গাড়ি চালক সজিব সারা পথ বিভিন্ন জনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং কখন কোথায় আছি তা জানিয়েছে। আবার ডাকাতরা চালককে কোনো আঘাতও করিনি। এঘটনায় চালক জড়িত। থানায় মামলার এজাহার দিয়েছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ হেফাজতে থাকা চালক সজিব বলেন, তিনি প্রথমবারের মতো গরু তুলেছেন গাড়িতে। ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন।
আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জানিয়ে কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলায়মান শেখ বলেন, চালককে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। থানায় ডাকাতি মামলা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
কেকে/এমআই