চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় নকল পিতা সাজিয়ে এক রোহিঙ্গা নারীর ভোটার হওয়ার চেষ্টায় তিনজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে আনোয়ারা উপজেলার নির্বাচন অফিস থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, সুমি আক্তার (রোহিঙ্গা), মো. তৈয়ব (রোহিঙ্গা), মো. ইসমাঈল।
জানা যায়, দুপুরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে নির্বাচন অফিসে আসে সুমি আক্তার (১৭) নামের এক রোহিঙ্গা নারী। এ সময় উপজেলার জুঁইদণ্ডি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. ইসমাঈল নামের একজনকে নকল পিতা সাজিয়ে আনা হয়। তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হওয়ায় অফিসের কর্মীরা তাদের উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে নিয়ে যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় বিশ বছর আগে থেকে মেয়েটির পিতা মো. তৈয়ব তার স্ত্রীসহ জুঁইদণ্ডি এলাকায় বসবাস শুরু করে। পরবর্তীতে মেয়েটির জন্মের পর তার মা মারা যায়। এরপর থেকেই মেয়ে এবং তার পিতা জুঁইদণ্ডি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস শুরু করে।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, মেয়েটির প্রকৃত নাম সুমি হলেও সুমাইয়া আক্তার মুন্নী নামে তার অন্য একটা জন্ম সনদ দিয়েছে। সেই জন্ম সনদে মো. ইসমাঈলকে পিতা এবং ইসমাঈলের স্ত্রী মোহসেনা খাতুনকে মাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নির্বাচন অফিসে সেই নারীর ভাই হিসেবে ইসমাঈলের ছেলে সিরাজুল ইসলাম, মো. ইউনুসের এনআইডি দেওয়া হয়। এছাড়া প্রয়োজনীয় সব ধরনের কাগজপত্র প্যানেল চেয়ারম্যান হিসেবে সত্যায়িত করেন ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ইব্রাহিম।
অভিযুক্ত সুমি আক্তার জানান, আমি কেইপিজেডে চাকরি করি। চাকরি সুবাদে এনআইডি প্রয়োজন হওয়ায় এই পন্থা অবলম্বন করে এনআইডির বানানোর চেষ্টা করি।
নকল পিতা ইসমাঈল জানান, মেয়েটি কান্নাকাটি করে বলছে তাই আমি মানবিক দৃষ্টিতে নকল পিতা সেজে এসেছি।
জুঁইদণ্ডি ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম জানান, মেয়েটিকে আমি চিনি না, ইসমাইলের মেয়ে মনে করে ভুলবশত আমি স্বাক্ষর করেছি।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু জাফর সালেহ জানান, দুপুরে কাগজপত্র নিয়ে তারা আসে। তাদের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় অফিসের স্টাফরা তাদের আমার কাছে নিয়ে আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিষয়টি স্বীকার করেছে। পরবর্তীতে তাদের আনোয়ারা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এবিষয়ে থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কাজ চলমান রয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনির হোসেন জানান, বিষয়টি শুনেছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তর লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেকে/এমআই