ইসরায়েলে বিদেশি বিনিয়োগ কমে প্রায় ৬০ শতাংশ। ফলে ২০২৩ সালের শুরুতেই দেউলিয়া হয় ৪৬ হাজারের বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
এইদিকে বেড়েই চলেছে ইসরায়েলিদের দেশ ছাড়ার প্রবণতা। সম্প্রতি দেশটির আর্থ-সামাজিক বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান শোরেস’র এক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে এমন এক তথ্য। এ খবর চিন্তার ভাজ ফেলেছে দেশটির রাজনীতিবিদসহ অন্যান্য খাত সংশ্লিষ্টদের কপালে।
প্রকাশিত সেই পরিসংখ্যানে দেখা যায় ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরের প্রথম ৯ মাসে গড়ে দেশ ছেড়েছেন ১৭ হাজার ৫শ’ ২৯ নাগরিক। অপরদিকে, গত বছর ২০২৩ সালে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৫ হাজারে। ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে অভিবাসী ইসরায়েলিদের দেশে ফেরার সংখ্যাতেও।
ইসরায়েলিদের দেশ ছাড়ার প্রবণতার পেছনে দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতা আর সাংবিধানিক সংকটই অন্যতম প্রধান কারণ। দেশটির বিচার বিভাগ সংশোধনের নামে একাধিক আইনি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন নেতানিয়াহু। যদিও তার মূল উদ্দেশ্য ছিল সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা কমিয়ে আনা। অবশ্য এসবে নাখোশ ইসরায়েলিরা। আর হামাসের সাথে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরুর পর তুঙ্গে ওঠে অস্থিরতা।
পরবর্তীতে সংঘর্ষ বাঁধে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ আর হুতি বিদ্রোহীদের সাথেও। কয়েকটি ফ্রন্টে যুদ্ধের কারণে ব্যাপক ধস নামে ইসরায়েলের অর্থনীতিতে। বিদেশি বিনিয়োগ কমে প্রায় ৬০ শতাংশ। ফলে ২০২৩ সালের শুরুতেই দেউলিয়া হয় ৪৬ হাজারের বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
নোবেলজয়ী ইসরায়েলি জীবতাত্ত্বিক এ্যারন চিচেনোভার বলেন, অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। শুধু হাসপাতাল না বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য সব জায়গায় লোকবল সংকট। এর সমাধান না হলে একসময় আমাদের আলাদা দেশ বলে কিছুই থাকবে না।
এত অধিক সংখ্যক ইসরায়েলির বাইরে চলে যাওয়ায় বেশ উদ্বিগ্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এতে করে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বই হুমকির মুখে পড়েছে বলে শঙ্কা তাদের।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা আর নিরাপত্তাহীনতায় ইসরায়েলি বাবা-ময়েরা সন্তানদের পাঠিয়ে দিতে চান অন্য কোনো দেশে। গোটা পরিবার দেশ ছাড়ার উদাহরণও কম নয়।
কেকে/এআর