কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলার ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর রাতেই কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে আহত এক নেতা।
রোববার বেলা বারটায় কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া শাখার নেতারা। সেখানে অভিযোগ করা হয়, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালিয়েছে। তাদের ধরতে পুলিশকে ২৪ ঘন্টার সময় বেধে দিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া শাখার মুখপাত্র পারভেজ মোশাররফ। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন- আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান, সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান, মূখ্য সংগঠক বেলাল হোসেন, যুগ্ন আহ্বায়ক সাইয়াদ ইসলাম, হুমাইরা কবির, সদস্য সুলতান মাহমুদ ও কেএম রাইয়ানুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, তিনিসহ কয়েকজন নেতা শনিবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া পৌরসভা চত্বরে আয়োজিত একটি মেলায় আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে স্টল পরিদর্শনের সময় কয়েকজন তরুণ তাকে ধাক্কা দেয়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর তারা (তরুনেরা) সংগঠিত হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় তারা দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে। হামলায় তিনিসহ যুগ্ন আহ্বায়ক সাইয়াদ ইসলাম ও হুমাইরা কবির আহত হন। ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে। কিন্তু একটি পক্ষ এই ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেক আইডি দিয়ে চরিত্র হরণের চেষ্টা চালাচ্ছে। যা একদমই সত্য নয়।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, হামলাকারীর পরিবারের সদস্যরাও হত্যার হুমকি দিয়েছে। কিন্তু পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে। হামলার ঘটনায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগকর্মী ও কিশোর গ্যাং বাহিনীর সদস্যরা জড়িত বলে জানতে পেরেছেন। জড়িতদের ধরতে ২৪ ঘন্টার সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। তা না হলে পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
লিখিত বক্তব্যে মুখপাত্র পারভেজ মোশাররফ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ওপর সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ ও আরডিএক্রা বয়েজ নামে একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দ্বারা পরিকল্পিতভাবে অতর্কিত হামলা হয়েছে। এই হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে আমির হামজা ও স্যাম সাদিক নামের দুই ব্যক্তি। তাদের সাথে আরো অন্তত ২৫ জন জড়িত ছিল। হামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। একটি মহল এই ঘটনার মোড় অন্যদিকে নিয়ে দোষীদের নিরপরাধ প্রমাণের চেষ্টা করছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিহাবুর রহমান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতাদের ওপর হামলার অভিযোগ রাতেই থানায় মামলা হয়েছে। আহত সাইয়াদ ইসলাম বাদি হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ২০ থেকে ৩০ জনকে।
তিনি আরও বলেন, রাতে অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় আসামি আশরাফুল ইসলাম (৫৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি হামলকারী স্যাম সাদিকের বাবা। আশরাফুল ইসলাম ছাত্রদের হত্যার হুমকি দিয়েছে বলে তাকে আসামি করেছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এজন্য তাদের কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কেকে/এজে