রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস উদযাপন করা হলেও পুরো আয়োজনজুড়ে ছিল নানা অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় কনসার্টের গাঁজা সেবনসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও নামাজের বিরতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উপেক্ষা করে কনসার্টের মত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়া হয়, যা অনেকের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
অনুষ্ঠানে অন্য প্রতিষ্ঠানের লোগো ব্যবহার করার পাশাপাশি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগোকে তার ওপর বসানো হয়, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির জন্য অবমাননাকর বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে দেখা যায় রংপুর রাইডার্স এর লোগোর উপর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো ব্যবহৃত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাত ৮ টার পর উচ্চস্বরে গান বাজানো নিষেধ। সেখানে সাউন্ড কত জোরে হবে আর সীমা কতক্ষণ থাকবে বলে জানিয়ে ছিল প্রক্টর বডি। কিন্তু গতকালের বিজয় কনসার্টের কোন সীমা ছিল না।
এদিকে বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্পনসর ছিলেন রংপুরের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় তিস্তা ইউনিভার্সিটি। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পনসরশিপ গ্রহণ করাকে অনেক শিক্ষার্থী প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তাদের অভিযোগ, এই পদক্ষেপ বেরোবির মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করতে পারে এবং এটি একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্বতার বিপরীতে যায়।
শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অভিযোগ করেছিল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পী অন্তর রহমানকে আনা হচ্ছে, যার বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সহযোগী নেতা হিসেবে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলেন, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ সংগঠনের সহযোগীকে আমরা ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না। প্রশাসন সতর্ক না হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে।বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের মতো আরেকটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমরা চাই না।পরবর্তীতে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে কনসার্টে বসে নাই।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ড. মোঃ তানজিউল ইসলাম বলেন, নামাজের সময় সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ না রাখা এই বিষয়টি আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আজানের সময় সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ ছিল। দর্শকদের আগ্রহের কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কনসার্ট শেষ করার সুযোগ হয়নি। আর মাদক সেবনকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো'র ব্যাকগ্রাউন্ডে রংপুর রাইডার্সের লোগো থাকা নিয়ে তিনি আরো বলেন, আমি এইমাত্র শুনতেছি। এটা আমার চোখ পড়েনি, আমি খেয়ালও করিনি এবং আমাকে কেউ জানাইও নি। এটা আমার সম্পূর্ণ অজানা ছিল। আর স্পনসরের বিষয়ে আমি জানি না ভিসি স্যার বলতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, ভিসি স্যার বলেছিলেন বিজয় দিবসটি আমরা সবাইকে নিয়ে উদযাপন করি। তাই সবাইকে নিয়ে আমরা করতে চেয়েছিলাম। আমাদের কিছু ভুল হয়েছে। সেগুলো আমরা ভবিষ্যতে লক্ষ রাখবো যেন আর না হয়। তবে আমাদের চেষ্টা ছিল তাই বড় ধরনের কোনো সমস্যা হয়নি।
উল্লেখ্য, বিজয় দিবস উদযাপনে এমন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক শৃঙ্খলা ও ঐতিহ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
কেকে/এইচএস