ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের প্রতিবন্ধক সকল কালো আইন বাতিল জনগণের দাবি। এ দাবি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বাস্তবায়নে উদ্যোগে নিতে হবে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মুনুমনস কিচেন-এ জুলাই-আগস্ট কিপ্লব : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করা মিডিয়া কর্মীদের সাথে মতবিনিময় ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছর গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরে ফ্যাসিবাদ কায়েমে বাধ্য করেছিল জালিম সরকার। ভিন্নমতের সংবাদ ও সংবাদ কর্মীদের উপর জুলুম নির্যাতন করে আজীবন ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করেছিলো। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের গডমাদার দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছে। জুলাই বিপ্লবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিক বন্ধুরা কাজ করেছেন। স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের প্রতিবন্ধক সকল কালো আইন বাতিল জনগণের দাবি। এ দাবি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বাস্তবায়নে উদ্যোগে নিতে হবে।
মাওলানা ইউনুছ আহমাদ আরো বলেন, পতিত সরকার ছাত্র জনতার বিপ্লবে দেশত্যাগ করলেও দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। সংখ্যালঘু নির্যাতনের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু সত্য কোনদিন গোপন থাকে না। আজ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনই মিডিয়ায় সাক্ষাতকার দিয়ে মিথ্যা প্রমাণিত করছে। সাংবাদিক বন্ধুদেরকে এ সকল অপপ্রচারের জবাব দিতে হবে। কেননা এ দেশ আমার, আপনার সকলের। এ দেশকে আমরা জীবন দিয়ে ভালবাসি।
সহকারি মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেন, রাজনীতি ও সাংবাদিকতা একইসাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এদের একটা ছাড়া অন্যটা অসম্পন্ন। দেশগড়ায় রাজনীতিবিদদের যেমন ভূমিকা থাকে তেমনি ভূমিকা থাকে সাংবাদিকদের। তাদের রিপোর্টে অনেক কিছু হয়। এ জন্য সাংবাদিকদেরও স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন দেশ গড়ায় ভূমিকা রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিক বন্ধুরা পেশাগত দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়ে থাকেন। তাদের এই ত্যাগে জাতি সঠিক কিছু তথ্য পেয়ে থাকেন। এমনই এক ঘটনা প্রবাহ জুলাই-আগস্ট বিপ্লব। এই বিপ্লবে যারা জীবন বাজি রেখে পেশাগত দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়েছেন তারা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই এবং তাদের ত্যাগের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি। সেইসাথে যারা জুলাই বিপ্লবে শহিদ হয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন তাদের জন্য সুস্থতার জন্য দোয়া করি।
সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় ও সম্মাননা প্রধান অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুুল কাইয়ুম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও দাওয়া বিষয়ক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলুল করীম মারুফ, ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, মুফতি ফরিদুল ইসলাম, মুফতি মো. মাছউদুর রহমান, ডা. মুজিবুর রহমান, মুফতি সিরাজুল ইসলাম, মুফতি নিজাম উদ্দিন, রাকিবুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন পরশ, মুহাম্মদ নাজমুল হাসান প্রমুখ।
মতবিনিময়শেষে জুলা-আগষ্ট ’২৪ বিপ্লবে জীবনবাজি রেখে পেশাগত দায়িত্ব পালন করা সংবাদকর্মীদের সম্মাননা প্রদান প্রদান করা হয়।
সম্মাননা প্রাপ্ত সংবাদকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাভিশনের বিশেষ
প্রতিনিধি মুহিব্বুল্লাহ মুহিব, এটিএন বাংলার স্টাফ রিপোর্টার মাজহারুল হক
মুহাজির, খোলা কাগজের স্টাফ রিপোর্টার শিপার মাহমুদ, জনবাণীর স্টাফ রিপোর্টার আবদুল্লাহ
আল জাহেদ (বর্তমান খোলা কাগজ), গ্লোবাল টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার আওলাদ হোসেন বাবলু, আরটিভির
সিনিয়র রিপোর্টার খান আল আমিন, দেশ টিভি রিপোর্টার সাহেদুজ্জামান সাকিব,
দৈনিক যুগান্তরের উত্তরা প্রতিনিধি মুহাম্মদ তারেক রহমান, দৈনিক সমকালের
মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার সাইমন মুবিন পল্লন, দৈনিক মানবজমিনের রিপোর্টার
হুমায়ুন কবির মাসুদ, দৈনিক ইনকিলাবের ফটো সাংবাদিক এসএ মাসুম প্রমুখ।
কেকে/এজে