বিয়ানীবাজারে উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে আজির মার্কেটে বহুতল ভবন নির্মানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে পরিবেশ বিনষ্ট সহ দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যে চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। যে কোন সময় মারাত্নক দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা যায়, বিয়ানীবাজারের অতি প্রাচীন একটি মার্কেট আজির মার্কেট। আজির মার্কেটের স্বত্তাধিকারী আজির উদ্দিনের মৃত্যুর পর তার উত্তরাধীকারীদের মধ্যে মার্কেট নিজ নিজ নামে রেকর্ড ও ভোগ দখল করে আসছেন। কিন্তু বিবাদমান জমির ফতেহপুর মৌজার জেএলনং ১০৭, খতিয়ান নং ৫১৯, আরএস খতিয়ান নং ৫৫০,১৬৫,৪৫৭,৭১৩,৪৯২ এর দাগ নং ১২২৯, আর এস ১৫০৯, জমির পরিমাণ ১৪৫৯৪ দোকান রকম ভূমি উভয়পক্ষ ভোগ দখল করে আসলেও বিরোধীয় জমি যার যার নামে রেকর্ড থাকলেও কোন রেজিষ্ট্রার্ড ভাগ ভাটোয়ারা নামা বা বন্টন নামা নেই। পক্ষদ্বয় ফারুক উদ্দিন ও আছাদ আহমদ আপন চাচা ভাতিজা হন। মৌরসী সূত্রে উভয়পক্ষ ভোগ দখল করে আসছেন।
সম্প্রতি আছাদ আহমদ বহুতল ভবন নির্মান কাজ শুরু করলে ভূমির পশ্চিম পাশের ইনার কলেজ রোড রাস্তায় যাতায়াতে জটিলতা এবং ভাগ ভাটোয়ারা ও হিস্যা সংক্রান্ত বিরোধ তৈরী হয়। মামলা গড়ায় আদালতে। নিন্ম আদালত থেকে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রীম কোর্ট পর্যন্ত শেষমেষ মামলা গড়ায়। সুপ্রীম কোর্ট বিয়ানীবাজার আজির মার্কেটের আংশিক স্বত্তাধিকারী ফারুক উদ্দিন এর আপীল আবেদন ৯১৩/২০২৪ এর প্রেক্ষিতে ১২/১২/২০২৪ইং বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট দালান নির্মাণে (স্টেটাস কো) স্থিতাবস্থা জারী করে। status quo অর্থ হল আদেশ জারীর পূর্বে যেমন অবস্থায় ছিল তেমন অবস্থায় রাখতে হবে। কিন্তু অপরপক্ষ আংশিক স্বত্তাধিকারী আছাদ আহমদ উচ্চ আদালতে আদেশ অমান্য করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ফারুক উদ্দিনের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, এই গলির মধ্যে আমাদের ২৮ ফুট প্রস্থ ও প্রায় ৪৫০ ফুট দৈর্ঘ্য যৌথ রাস্তা রয়েছে। আমার মার্কেট এবং দোকানের সামনে ইট, বালু, পাথর ইত্যাদি মালামাল দিয়ে ভরাট করে রাখা হয়েছে। এতে জনসাধারন ও যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে এবং দোকান-কোটা, ব্যাংক-বীমা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। এছাড়া আমার বিল্ডিং এর বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে।
সরেজমীনে গিয়ে দেখা যায় এমনটিই। পরিবেশ দুষন হচ্ছে। দোকান কোটা, ব্যাংক, বীমা ছাড়াও বাসা বাড়ীর লোকজন শব্দ দুষনের শিকার হচ্ছেন। ফলে উভয়পক্ষের মধ্যে চাঁপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। পরিবেশ বিনষ্ট, শান্তি শৃংখলায় বিঘ্ন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যে কোন সময় মারাত্নক দূর্ঘটানা ঘটার আশংকা রয়েছে।
উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে বহুতল ভবন নির্মান বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বাদী ফারুক উদ্দিন, সম্প্রতি তিনি উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ সহ বর্ণিত স্থানে কোন প্রকার দাঙ্গা সৃস্টি না হওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক সিলেট, পুলিশ সুপার সিলেট, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিয়ানীবাজার, অফিসার ইনচার্জ বিয়ানীবাজার, সহকারী কমিশনার ভূমি বিয়ানীবাজার, কমান্ডিং অফিসার বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, গোলাপগঞ্জ, সিলেট বরাবরে আবেদন করেছেন। তদুপরি অপরপক্ষ আইন অমান্য করে আদালতের আদেশ তোয়াক্কা না করে বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এর সাথে আালাপকালে তিনি জানান, উচ্চ আদালত থেকে আমাদের কাছে কোন নির্দেশনা আসেনি আসলে আমরা ব্যবস্থা নিব।
এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি জানি, কোর্টের আদেশ যাতে বাস্তবায়ন হয় সেজন্য থানাকে ফরওয়ার্ড করেছি। বাস্তবায়নের জন্য যদি কোন সহয়োগিতা লাগে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করব।
অপরপক্ষ আছাদ উদ্দিন এর ইঞ্জিনিয়ার নুর জানান, বিষয়টি তিনি অবহিত নন।
কেকে/এমএস