জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় আমন ধান কাটার পর পুরোদমে চলছে আলু রোপণের কাজ। কিছুদিন পরেই হবে সেচের প্রয়োজন। এর মধ্যে মাঠে মাঠে গভীর নলকূপের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরির ঘটনা ঘটছে। চলতি মাসের ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫৭টি ট্রান্সফরমার ও ১৩টি মিটার চুরি হয়েছে। এর মধ্যে কালাইয়ে ২৩টি ট্রান্সফরমার ও ৬টি মিটারও চুরি হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের আপলাপাড়া মাঠ থেকে দেড় মাস আগে আতাউর রহমানের গভীর নলকূপের ১০ কেভির দুটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা জমা দিয়ে নতুন করে ট্রান্সফরমার লাগান।
২৭ নভেম্বর রাতে আবারও তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি হয় তাঁর। থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও চোর শনাক্তে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বারবার চুরি হওয়ায় আর ট্রান্সফরমার কেনেননি। সেচ দেওয়া বন্ধ রেখেছেন আতাউর।
একই অবস্থা আঁওড়া মহল্লার গভীর নলকূপের মালিক আনিছুর রহমানের। ২৩ নভেম্বর রাতে তাঁর গভীর নলকূপের তিনটি ট্রান্সফরমারের তার নিয়ে গেছে চোরেরা। ২ লাখ ১০ হাজার টাকা জমা দিয়ে তিনটি ট্রান্সফরমার লাগিয়ে সেচ দিচ্ছেন। ফের চুরি হলে তিনিও সেচ বন্ধ করে দেবেন বলে জানান।
কয়েকজন গভীর নলকূপের মালিক বলেন, মিটার চুরির স্থানে চোরচক্র চিরকুটে বিকাশ নম্বর লিখে ফেলে যাচ্ছে। ওই নম্বরে যোগায়োগ করে টাকা দিলেই মিটার ফেরত পাচ্ছেন। তবে ট্রান্সফরমারের ক্ষেত্রে চিত্র উল্টো। ট্রান্সফরমারের তামার তার খুলে নিয়ে বোতল রেখে যাচ্ছে চোরেরা। ফলে ট্রান্সফরমার কোনো কাজে আসছে না। এতে নলকূপের মালিকদের লাখ লাখ টাকা গচ্চা যাচ্ছে। তাদের দাবি, টান্সফরমার চোরদের শনাক্ত করা কঠিন হলেও বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে মিটার চোরদের শনাক্ত করা সহজ। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গা-ছাড়া ভাব দেখা যাচ্ছে। থানায় অভিযোগ করলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হচ্ছে না।
কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেন বলেন, কয়েকদিন আগে ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গভীর নলকূপের মালিকদের নিজ উদ্যোগে পাহারার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।
জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আবু উমাম মাহবুবুল হক বলেন, ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরি রোধে সমিতির পক্ষ থেকে নলকূপের মালিকদের পাহারার ব্যবস্থা করতে মাইকিং করা হয়েছে।
কেকে/এমআই