স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন না হওয়ায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম আক্ষেপ করে বলেছেন, চোরে চোরে হালি, এক চোরে বিয়ে করে আরেক চোরের শালি।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বগুড়ার শেরপুর বাসষ্ট্যান্ডে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শায়খে চরমোনাই বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অনেক মানুষ জীবন দিয়েছে, আহত ও ত্যাগ শিকার করেছে। তবুও মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। অনেক দল ও ব্যক্তির পরিবর্তন হলেও নীতি আদর্শের পরিবর্তন হয়নি। দুর্নীতিবাজদের মাধ্যমে দুর্নীতি বন্ধ হয় না, ধর্ষকের মাধ্যমে ধর্ষন বন্ধ হয় না, ডাকাতের মাধ্যমে ডাকাতি বন্ধ হয় না, সন্ত্রাসীর মাধ্যমে সন্ত্রাস বন্ধ হতে পারে না।
মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেন, অন্তবর্তী সরকারের সংস্কারে কোন কোন দল বারবার বাধা দিচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে- চোরে চোরে হালি, এক চোরে বিয়ে করে আরেক চোরের শালি। দীর্ঘ ৫৩ বছর পর্যন্ত এরা সিন্ডিকেট করে দেশটাকে লুটপাট করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এক চোর চুরি করে, আরেক চোরকে সুযোগ করে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য এমন- এতো দিন আমরা করেছি, এখন তোরা কর। এই চোর ও ডাকাতদেরকে আর ক্ষমতায় দেখতে চাই না।
জনগণের রক্ত নিয়ে যারা বারবার হোলি খেলেছে তাদেরকে আর ক্ষমতায় দেখতে চাই না। ৫ আগস্টের পরে যারা দখলদারিত্ব করেছে, খুন করেছে, চাঁদাবাজি করেছে, জুলুম ও অবিচার করেছে তাদেরকে ক্ষমতায় দেখতে চাইনা, জনগণও তাদেরকে ক্ষমতায় নিবে না।
তিনি বলেন, দুর্নীতি-দুঃশাসন, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি, সিন্ডিকেটমুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে নীতি ও আদর্শবান ব্যক্তিদেরকে ক্ষমতায় আনতে হবে। এছাড়া বারবার আন্দোলন সংগ্রাম করলে ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না। এজন্য শুধু নেতা নয় নীতির পরিবর্তন করতে হবে।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির বলেন, ফ্যাসিস্টকে হটাতে পারলে বৈষম্য দূর হবে এমন প্রত্যাশায় দেশের মানুষ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মানুষ মনে করেছিলো শান্তি ও মুক্তি পাবে, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। এজন্য জীবনের মায়া ত্যাগ করে আমরা নিজেরা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা-কর্মীদেরকে নিয়ে রাজপথে অবস্থান নেয়ার কারণে দেশের মানুষ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ফ্যাসিস্টরা ক্ষমতা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিল।
তিনি বলেন, ৪ আগস্ট শাহবাগ চত্বরের বক্তব্যে আমি বলেছিলাম ৫ আগস্ট জনগণ গণভবন দখল করবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমার সে বক্তব্যকে কবুল করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। ৫ আগস্টের পরে মিথ্যা মামলার পাহাড়, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব এখনো দেখছি। তবে কেন আন্দোলন করেছিলাম! এই মানুষগুলো কেন জীবন দিয়েছিল? আহত হয়েছিল? শুধু চাঁদার হাত পরিবর্তনের জন্য? চাঁদা গ্রহীতার হাতের পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু চাঁদা গ্রহন বন্ধ হয়নি, জুলুম-অত্যাচারের পরিবর্তন হয়নি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শেরপুর উপজেলা সভাপতি মাও. মোকাল্লেম হোসেন ওসমানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নায়েবে আমির আল্লামা আব্দুল হক আজাদ, বগুড়া জেলা সভাপতি মাও. আ ন ম মামুনুর রশীদ, মাও. আব্দুল মতিন, মুফতী মুহিব্বুল্লাহ, প্রভাষক মুহা. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
কেকে/এমআই