উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে গত কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ঘন কুয়াশা এবং হিমেল বাতাসের সঙ্গে ঝিরিঝিরি তুষারপাতও দেখা দিয়েছে। এই শীতের কারণে কৃষকদের উদ্বেগ বাড়ছে, বিশেষ করে শীতকালীন সবজি, আলু, পেঁয়াজ, টমেটো ক্ষেত নিয়ে।
শীতের প্রভাব শুধু কৃষকরা নয়, শিশু, বৃদ্ধ এবং গবাদি পশুর জন্যও নানা সমস্যা সৃষ্টি করছে। তীব্র শীতে প্রান্তিক কৃষকেরা চিন্তা-উদ্বেগে পড়েছেন, বিশেষ করে গবাদি পশু শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কৃষকরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় সহায়তা দাবি করছেন।
শীতের তীব্রতার কারণে আলু, সরিষাসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি আবাদ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। আলুর গাছগুলো যখন সজীব হয়ে উঠেছে, ঠিক তখনই ঘন কুয়াশা এবং তীব্র শীতের সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহের কারণে আলু ক্ষেতের পাতার মড়ক বা লেটব্লাইট রোগের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
উপজেলার কৃষক মো. আজাদ সরদার জানান, এবার আমি কয়েক বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি, কিন্তু তীব্র শীতের কারণে আলুর পরিচর্যায় কষ্ট হচ্ছে। সার, বীজ, সেচ এবং শ্রমিকের দামও বেড়েছে, আর খামলাও পাওয়া যাচ্ছে না। যদি আলু ক্ষেত পচন রোগে আক্রান্ত হয়, তাহলে সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে যাবে।
কৃষক ফরিদ জানান, এ বছর ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। তবে আবহাওয়া নিয়ে আমি চিন্তিত।
আরেক কৃষক আয়েন উদ্দিন জানান, আমি চলতি মৌসুমে সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে লালপাকরী জাতের আলু আবাদ করেছি, যদি কোনো রোগ-বালাই না হয়, তবে আশা করছি বাম্পার ফলন পাবো।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার জানান, আলু এবং বোরো বীজতলা ঘন কুয়াশার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষকদের আগাম সতর্কীকরণ হিসেবে আমরা ছত্রাকনাশক ব্যবহার এবং অন্যান্য পরামর্শ দিচ্ছি, যাতে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায়।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সহায়তা দিতে সব সময় প্রস্তুত রয়েছেন, এবং তারা শীতকালীন সবজি চাষের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
কেকে/এএম