পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় নিরাপদ সবজি চাষে সফলতার হাতছানি নিরাপদ সবজি চাষে রাসায়নিকের পরিবর্তে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহারে সফল হয়েছেন উপজেলার কৃষকেরা। এতে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের পাশাপাশি কমেছে উৎপাদন খরচ।
আটঘরিয়া উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় উল্লেখযোগ্য হারে শীতকালীন সবজি আবাদ হয়। শিম উৎপাদনে সুখ্যাতি ও প্রাচুর্যের কারণে ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলী গ্রাম ও আটঘরিয়ার পারখিদিরপুর, খিদিরপুর পরিচিতি ‘শিম সাগর’ নামে।
সরেজমিনে আটঘরিয়া উপজেলার মাজপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, অনেক চাষিই শিম চাষে ব্যবহার করছেন জৈব সার। শুধু শিম নয়; ফুলকপি, টমেটো, বেগুনসহ অন্য ফসল চাষেও রাসায়নিক সারের পরিবর্তে ভার্মি কম্পোস্টসহ নানা ধরনের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির জৈব সার ব্যবহার করছেন চাষিরা।
প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও মাটির উর্বরতা কমে যাওয়ায় গত এক দশকে জেলার এসব অঞ্চলে মাত্রাতিরিক্ত ভাবে বেড়ে যায় কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার।
এতে উৎপাদিত সবজি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা জানালে রাসায়নিকের ব্যবহার কমিয়ে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ দেয় কৃষি বিভাগ।
কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব বালাইনাশক ও বিভিন্ন ফাঁদে পোকা দমন কৌশল প্রয়োগ করায় উৎপাদিত হচ্ছে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন নিরাপদ সবজি। নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও উপকরণ সহযোগিতায় পরীক্ষামূলক প্রকল্পে সফল হওয়ায় এখন রাসায়নিকমুক্ত শিম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা।
আটঘরিয়া উপজেলার সবজি চাষি দুলাল মৃর্ধা, ওসমান গনি সহ অনেকেই জানান, আধুনিক কৃষি পদ্ধতিতে ফলন বাড়ানোর জন্য জমি এখন একটু সময়ও ফেলে রাখা হয় না। একটি সবজি উঠতে না উঠতে আরেকটির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। খুবই অল্প সময়ে নতুন আরেকটি আবাদ শুরু হয়।
জমির জো (প্রস্তুতি) আনতে ও দ্রুত আবাদে যেতে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। ফলন বাড়াতেও এসব ব্যবহার হয়। তাদের জন্মানো সবজি খেয়ে নিজেদেরই রোগবালাই বেড়ে গেছে।
বিভিন্ন প্রশিক্ষণে জানতে পারেন, এর কারণ অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার। এ জন্য তারা এখন জৈব সার বেশি ব্যবহার করছেন।
মাজপাড়া ইউনিয়নের চাষি আবু সাঈদ বলেন, ‘আগে আমরা প্রচুর রাসায়নিক সার ব্যবহার করলেও এখন তা করছি না। জৈব সারের ব্যবহার বাড়িয়েছি।
বিভিন্ন প্রশিক্ষণ থেকে শেখা পদ্ধতিতে জৈব সার তৈরি করে সেগুলো জমিতে দিচ্ছি। এতে একদিকে আবাদের খরচ কমছে, অন্যদিকে নিরাপদ সবজি উৎপাদন হচ্ছে।
কেকে/এআর