জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মাত্রাই বাজারের এক হোটেল ব্যবসায়ীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক দোকানঘর জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম জাহিদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় হোটেল ব্যাবসায়ী মোঃ রেজাউল করিম তালুকদার মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ এর বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে এ উপজেলার মাত্রাই বাজারের পশ্চিম পাশে শান্তিপূর্ণভাবে হোটেল ব্যবসা করে আসছেন রেজাউল করিম তালুকদার। গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাহিদুল ইসলাম সদলবলে ওই হোটেলে প্রবেশ করে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন।
চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ব্যবসায়ী রেজাউল করিমকে গলা ধাক্কা দিয়ে হোটেল থেকে বের করে দেয়। এরপর ওই হোটেলে তালা ঝুলিয়ে দেন জাহিদ। এ সময়ে হুমকি দিয়ে বলা হয়, ফের দোকানে এলে তাঁকে হত্যা করা হবে। এরপর তারা ওই দোকানটিকে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে রূপ দেন। তারপর দোকানের সামনে টাঙিয়ে দেন দলীয় সাইনবোর্ড।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী হোটেল ব্যবসায়ী রেজাউল করিম তালুকদার খোলা কাগজকে বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। কারণ, ওই দোকানের উপার্জনে আমার সংসার চলে। দোকানঘরে আমার রেফ্রিজারেটর, চেয়ার, টেবিল, ফ্যানসহ প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকার মালামাল ও আসবাব আটকে আছে। এ ঘটনায় আমি মারাত্মক অসুস্থ হই। চিকিৎসা নিই বগুড়া টিএমএসএস হাসপাতালে। সুস্থ হয়ে কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবরে লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছি। আশা করি সুবিচার পাব।
এ বিষয়ে জাহিদুল ইসলাম খোলা কাগজকে বলেন, চাঁদা দাবির বিষয়টি সত্য নয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে হোটেলের জায়গাটিতে বিএনপির লোকজন বসতো। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর জায়গাটিতে হোটেল করা হয়েছে। অনেক দিন ধরে হোটেল বন্ধ রয়েছে। সেই জায়গাটি নেওয়ার জন্য হোটেলের মালিকের কাছে গিয়ে সব জিনিস সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। তিনি সরিয়ে নিয়েছেন। পরে জায়গাটিতে কার্যালয় করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কালাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইব্রাহীম হোসেন ফকির খোলা কাগজকে বলেন, বিএনপির সরকারের শাসনামলে ওই দোকানের স্থানে বিএনপির দলীয় কার্যালয় ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সেটি মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম জাহিদসহ অন্যরা দখলে নিয়েছে বলে জানি। তবে এ কাজে আমি কোনো নির্দেশ দিইনি। তবে সেটিকে দলীয় কার্যালয় করার কথা নয়। এ ধরনের কোনো নির্দেশনাও দেওয়া হয়নি।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন খোলা কাগজকে বলেন, লিখিত একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ ঘটনাটি আমি কালাই থানায় যোগদানের আগের। তারপরও বিষয়টি আমলে নিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/এমআই