শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,
১০ ফাল্গুন ১৪৩১
বাংলা English

শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রাথমিক সুপারিশমালা হস্তান্তর      জুলাই বিপ্লবের কৃতিত্ব জানালেন মির্জা ফখরুল      তাড়াশে গাছে গাছে আমের মুকুল ম-ম ঘ্রাণে মুখরিত       সশস্ত্র বাহিনী প্রধানকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প      মুসলিম উম্মাহ’র শান্তি কামনার মধ্য দিয়ে চরমোনাই মাহফিল সমাপ্ত      সুনামগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১৪৪ ধারা জারি       ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ চাওয়া ছাত্ররাই এখন রাজনীতিতে      
গ্রামবাংলা
সালথায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে চলছে ডাকাতির নাটক, বিব্রত পুলিশ!
সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৪:৪৬ পিএম  (ভিজিটর : ৮৮)
ছবি: প্রতিনিধি

ছবি: প্রতিনিধি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে ফরিদপুরের সালথায় সংঘর্ষ কমে গেলেও এলাকায় গ্রাম্যদল পক্ষ ভারী করা, অধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে চলছে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ডাকাতির নাটক। একের পর এক ঘটছে এই ধরনের ঘটনা। এতে বিব্রত হচ্ছে পুলিশ, হয়রানীর শিকার হচ্ছে নিরহ মানুষ।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য সৌদি প্রবাসী মো. কাউসার মাতুব্বরের স্ত্রী ইতি বেগম গোয়ালপাড়া গ্রামে তাদের নিজ বাড়িতে লুটপাট ও ডাকাতির অভিযোগ এনে সালথা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগে বলা হয়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গোয়ালপাড়া গ্রামের আছির উদ্দিন শেখের ছেলে জাহাঙ্গীর শেখ, কবির শেখ, আয়নাল শেখের ছেলে ছেকন শেখ, হালিম শেখের ছেলে সুজন শেখ, রব মোল্যার ছেলে আবুল খায়ের মোল্লা, খান প্রমানিকের ছেলে কামরুল প্রামানিক, জীবন প্রমানিকের ছেলে জাকির প্রমানিক, শুক্কুর প্রমানিক, রহমান শেখের ছেলে নয়ন ও অজ্ঞাত ২-৩ জন তাদের ঘরের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে চালের ড্রামের মধ্যে রাখা নগদ ৮ লাখ টাকা ও দেড় ভরি স্বর্ণালংকার এবং তের বিঘা জমির দলিল পত্রাদি লুট করে নিয়ে যায়।

অভিযোগ পেয়ে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান। তিনি ঘটনাটি তদন্ত করার সময় কোনো তালা ভাঙ্গা না দেখায় চালের ড্রামের মধ্যে রাখা নগদ ৮ লাখ টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে ডাকাতি মামলার বাদি ইতি বেগম কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।

এছাড়া উক্ত মামলার আসামিদের সাথে ইতি বেগমের গ্রাম্যদল পক্ষ নিয়ে ঝামেলা থাকায় বিষয়টি পুলিশের সন্দেহ হলে তারা (পুলিশ) এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানতে পারেন ডাকাতির ঘটনাটি পুরোটাই সাজনো। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এই লুটপাটের নাটক সাজানো হয়েছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, কাউসারের পরিবারের লোক আওয়ামী লীগের রাজনীতি সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। কাউসার জীবিকার তাগিদে বর্তমানে সৌদি আরব রয়েছেন। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে কাউসারের স্ত্রী ইতি বেগম গোয়ালপাড়া গ্রামে বিএনপির এক পক্ষের নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এলাকায় তার পক্ষে লোকজন ভিড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন। এরই অংশ হিসাবে গত বৃহস্পতিবার রাতে ডাকাতি ও লুটপাটের নাটক সাজিয়ে গোয়ালপাড়া গ্রামের কিছু নিরীহ লোককে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন।

ডাকাতি ও লুটপাট মামলার বাদী কাউসার মাতুব্বরের স্ত্রী ইতি বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে আমি বাড়িতে ছিলাম না। এই সুযোগে ডাকাতেরা আমার বাড়িতে ঢুকে ঘরের তালা ভেঙ্গে নগদ ৮ লক্ষ টাকা সহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়।

অভিযোগে যাদের নাম দেওয়া হয়েছে তারা ডাকাত কি-না এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এদের সাথে আমার গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে ঝামেলা চলছে। তবে এরা ডাকাতির সময় ছিল কি-না আমি জানি না। এদের নাম আমার শাশুড়ি বলেছে। তবে আমি চাই যারা ডাকাতি ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িত পুলিশ তদন্ত করে তাদের খুঁজে বের করবে। সে যদি আমার কোনো আপন লোকও হয়, তাকেও ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর এই ঘটনায় সালথা থানা পুলিশ যদি মামলা না নেয়, তাহলে আমি কোর্টে মামলা করবো।

অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর শেখ বলেন, গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে ইতি বেগমের সাথে আমাদের ঝামেলা চলছে। এ কারণেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। আশা করি পুলিশ তদন্ত করে সত্য ঘটনা উদঘাটন করবে।

অপরদিকে এর আগে গত ১৩ নভেম্বর দুপুরের জমিজমা নিয়ে বিরোধ ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সালথার সোনাপুর ইউনিয়নের সোনাপুর পূর্বপাড়া একটি নতুন কবরস্থানের পাশে সোনাপুর পুর্বপাড়া গ্রামের সাহেব মোল্যার ছেলে আনিচুর মোল্যাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে মারাত্বক জখম করে। এই ঘটনায় ১৭ জনকে আসামী করে সালথা থানায় মামলা করা হয়। এদের মধ্যে আতিক ফকির, হাসেম ফকির, আতিকুর মিয়া ও কাইয়ুম নামে চারজনকে আটক করে জেল হাজতে দেয় সালথা থানা পুলিশ। এই মামলার অন্যন্যা আসামীদের বাঁচাতে ৫ ডিসেম্বর স্থানীয় সোনাপুর ইউনিয়নের পূর্বসোনাপুর গ্রামের মো. চানু ফকিরের বাড়িতে ঘরের টিনের চালা কেটে কয়েক ডাকাত ভেতরে ঢুকে চার বছরের এক শিশুর গলায় চাকু ধরে নগদ ৩ লাখ টাকা, দুটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ও ৪ ভরি স্বর্ণালংকারসহ ৯ লাখ টাকার মালপত্র ডাকাতি অভিযোগ এনে ৫ ডিসেম্বর সালথা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন আনিচুর মোল্যাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামী মো. চানু ফকিরের স্ত্রী মোছা. শিউলী বেগম। এতে ডাকাত হিসেবে চিহ্নিত করেন আনিচুর হত্যা প্রচেষ্টা মামলার বাদী আনিচুরের আপন ভাই হাফিজুর মোল্যা ও হাদি মোল্যাকে।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, গোয়ালপাড়া গ্রামে ঘটনা শুনে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাই। প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত করে ডাকাতির কোন আলামত পাওয়া যায়নি। অন্য কোনো বিষয় থাকতে পারে যা বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে সালথার বিভিন্ন এলাকায় গ্রাম্যদল পক্ষ ভারী, অধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ডাকাতির নাটক সাজানো হচ্ছে, এতে আমরা বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে যাচ্ছি।

ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সালথা) সার্কেল মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, আমরা এই ধরনের কিছু অভিযোগ পেয়েছি। প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

কেকে/এএম
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ধনবাড়ীতে জামায়াতের যুব সম্মেলন অনুষ্ঠিত
টঙ্গীতে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
ভ্যানচালকের জমিতে কোটিপতির আধিপত্য বিস্তার
জবির ‘এ’ ইউনিটের প্রথম শিফটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
আধিপত্য বিস্তারে বিএনপি-আ.লীগ সংঘর্ষে আহত ৫০

সর্বাধিক পঠিত

ভূঞাপুরে যুবদল নেতাকে কুপিয়ে আহত করেছে সন্ত্রাসীরা
মহিলা জামায়াত নেত্রীকে ছুড়িকাঘাতে হত্যা
দেশে চলমান নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে নোবিপ্রবিতে মশাল মিছিল
গঙ্গাচড়ায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা মিস্টার গ্রেফতার
ধামরাইয়ে স্ত্রীর সামনে স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা

গ্রামবাংলা- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝