খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন। দিনটি উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার সাঁওতাল আদিবাসী পল্লীগুলোতে। বিশেষ করে আলাদীপুর ইউনিয়নের সূর্যপাড়া, পারইল, শ্রীরামপুর, বাসুদেবপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা বাড়িঘর ও গির্জা সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, আলাদীপুরের সূর্যপাড়া গ্রামের লিনা কিচকু ও তার সঙ্গীরা মাটির ঘরের দেয়ালে কয়লার গুড়ো, চুন এবং নীল রং দিয়ে কারুকার্যময় আলপনা আঁকছেন। বড়দিনের বিশেষত্ব তুলে ধরতে প্রতীকী গোয়ালঘর তৈরি করে গির্জাগুলোকে বর্ণিল সাজে সাজানো হচ্ছে।
সূর্যপাড়ার আরেক বাসিন্দা লুচিয়া কিচকু বলেন, টাকা পয়সা কম হলেও আমরা উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করি। একই চিত্র দেখা যায় পারইল গ্রামে, যেখানে আলবিনা বাস্কে তার ঘরে নতুন লেপন দিয়েছেন এবং চুন দিয়ে নকশা তৈরি করছেন।
উপজেলার ৫৮টি গির্জায় বড়দিন উদযাপনের জন্য নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। ফাদার জসিম ফিলিপ মুর্মু জানান, ২৪ ডিসেম্বর রাত থেকে প্রার্থনা শুরু হবে এবং ২৫ ডিসেম্বর সারাদিন বিশেষ প্রার্থনা, গান এবং যিশুখ্রিষ্টের জীবনী স্মরণ করা হবে।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গির্জাগুলোতে ৫০০ কেজি করে মোট ২৯ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ তমাল জানান, উৎসবটি যাতে শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায়, তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
উপজেলার আদিবাসী নেতা কমল কিসকু জানান, ফুলবাড়ীর ৭২টি আদিবাসী পাড়ায় বসবাসকারী প্রায় সাড়ে ৬ হাজার সাঁওতাল আদিবাসী এদিন গির্জায় প্রার্থনা করেন। তাদের জন্য বড়দিন শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং ঐক্য, আনন্দ ও উদ্দীপনার প্রতীক।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর এসব নারীদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সৃজনশীলতার ছোঁয়ায় দিনাজপুরের এই আদিবাসী পল্লীগুলো বড়দিনের আনন্দে সেজে উঠছে নতুন রঙে।
কেকে/এএম