ইসলামের মূল ভিত্তি নামাজ। নামাজ ইসলামের প্রাণ। মুমিন ও কাফেরের মাঝে বড় পার্থক্য নামাজ। পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ ছাড়াও নফল নামাজ পড়ার বিধান ইসলামি শরিয়তে বিদ্ধমান রয়েছে। নামাজ আদায়ের জন্য নামাজের সময় হওয়া জরুরি।
অনেক সময় মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্ট্রোকের মত বড় অসুস্থতায় রোগী কিভাবে নামাজ আদায় করবেন। এ বিষয়ে অনেকে জানতে চান। স্ট্রোক করলে অনেক সময় দেখা যায় কাউকে চিনতে পারছে না। মাঝে মধ্যে একটু জ্ঞান ফিরে এলেও পরক্ষণই আবার তা লোপ পায়। এমতাবস্থায় তার নামাজের হুকুম কী?
রোগীর যদি এমন অবস্থা হয় তাহলে তার উপর নামাজ ফরজ না। হযরত আয়শা রা. থেকে বর্ণিত, রসুল সা. বলেন, তিন ব্যক্তি থেকে (হিসাব-নিকাশের) কলম উঠিয়ে রাখা হয়েছে, ১. ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষণ-না সে জাগ্রত হয়। ২. নাবালেগ, যতক্ষণ-না সে বালেগ হয়। ৩. পাগল ব্যক্তি, যতক্ষণ-না সে সুস্থ হয়। (তাহাবি ৩০২৮, আবু দাউদ, হাদিস ৪৪০৫, তিরমিজি, হাদিস ১৪২৩, সুনানে দারা কুতনি, হাদিস ১৭৩, মুসনাদে আহমাদ, হাদিস ৯৪০)
অনেকেই নানা কারণে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। কেউ অল্প সময় পর ঠিক হয়ে যান। আবার অনেকে দীর্ঘ দিন ধরে অজ্ঞান থাকেন। এ ক্ষেত্রে রয়েছে সুন্দর সমাধান। এ নিয়ে দুটি মতামত পাওয়া যায়।
বিখ্যাত আলেম ইমাম নাখায়ি রহ. বর্ণনা করেন, একদিন একরাত অজ্ঞান থাকলে (ওই সময়ে ছুটে যাওয়া) নামাজ কাজা পড়তে হবে। আর এর চেয়ে বেশি হলে নামাজ কাজা করতে হবে না। (মুসান্নেফে ইবনে আবি শায়বা)
অজ্ঞান হওয়ার পর একটানা ৬ ওয়াক্ত বা তার চেয়ে বেশি নামাজ ছুটে যায় তবে কাজা আদায় করতে হবে না। তবে হজরত নাফে রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু একবার দুই দিন অজ্ঞান ছিলেন কিন্তু তিনি ওই সময়ের নামাজ কাজা করেননি। (মুসান্নেফে ইবনে আবি শায়বা)
কেউ ৬ ওয়াক্তের কম সময় অজ্ঞান থাকেন তবে তার ছুটে যাওয়া নামাজ কাজা করতে হবে। আর যদি কারো দুই দিনের বেশি সময়ের নামাজ ছুটে যায় তবে তার অজ্ঞান থাকাকালীন সময়ের নামাজ কাজা আদায় করতে হবে না। (কিতাবুল আছল, বাদায়েউস সানায়ে, আলবাহরুর রায়েক)
কেকে/এআর