ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে চাঁদা না পেয়ে ঠিকাদারের লোকজনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার ও তার সহকারী হারুন অর রশিদ নামে দুইজন আহত হয়েছেন।
আহত ম্যানেজার আ. হালিম জানান, হামলার ব্যাপারে ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিজানুর রহমান কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে আলোচনা করে শৈলকুপা থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্মানাধীন শৈলকুপা-লাঙ্গলবাঁধ রোডে কাজ শেষে অবশিষ্ট থাকা সাব বেজের নির্মাণ সামগ্রী (খোয়া-বালির মিশ্রণ) অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিকালে স্থানীয় একটি চাঁদাবাজ চক্র বাঁধা দেয়।
তাদের অভিযোগ, থানা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেনের পুত্র উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মো. সাদাত হোসেনের নেতৃত্বে চলতি সপ্তাহে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। চাহিদামত টাকা না দেওয়ায় ভেকু মেশিন ব্যবহার করে লাঙ্গলবাঁধ-শৈলকুপা রোডের মহিলা কলেজ অদূরে পাঠানপাড়া গ্রামে জমা থাকা অন্তত ১৫/২০ ট্রাক খোয়া বালির মিশ্রণ জোরপূর্বক তুলে নেয় চক্রটি।
এরপর প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আ. হালিম থানা বিএনপির সভাপতি সম্পাদকসহ একাধিক নেতাদের মৌখিকভাবে অবগত করলে তারা থানা বিএনপির কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিতে বলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আ. হালিম ও তার সহযোগী হারুন অর রশিদ উপজেলা মোড়ের একটি কম্পিউটার ঘরে দরখাস্ত লিখতে গেলে সেখানে হামলার শিকার হন।
আহতদের অভিযোগ, যুবদল নেতা সাদাত হোসেনের নেপথ্য নেতৃত্বে এনামুল, রাকিব, বাবুল, মজিবরসহ একাধিক হামলাকারীরা তাদের মারপিট করে।
চিকিৎসাধীন হারুন অর রশিদ জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির কাজ শেষে তাদের অবশিষ্ট মালামাল অন্যত্র নিয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু স্থানীয় সংজ্ঞবদ্ধ গ্রুপটি তাদের চাহিত টাকা না দেওয়ায় এবং বিএনপির নেতাদের অবগত করানোর কারণেই তারা হামলার শিকার হয়েছেন।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ম্যানেজার আ. খালেক মুঠোফোনে জানান, স্থানীয়দের অনৈতিক দাবি পূরন না করায় এবং তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি নেয়ায় নেক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে অভিযুক্ত যুবদল নেতা সাদাত হোসেনকে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ না করার বক্তব্য পাওয়া যায় নাই। তবে তার পিতা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, এ ধরণের ঘটনা তিনি জানার পর পার্টি অফিসে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা ছিল, এখন পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি আবেদন পাওয়া যায়নি।
এ সময় তিনি জানান, হামলার ঘটনায় তার ছেলে জড়িত নয়। বিষ্ণুদিয়া গ্রামের একজন মানুষ মারা যাওয়ায় ঘটনার সময় সাদাত হোসেন সেই জানাযায় ছিলেন। তার রাজনৈতিক সুনাম নষ্ট করতেই হয়তো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি উদ্দেশ্যমূলক বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে থাকতে পারে। তিনি কঠোরভাবে এ ঘটনার ন্যায় বিচার করবেন বলেও নিশ্চিত করেন।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন বাবর ফিরোজ বলেন, বিষয়টি বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি, তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লিখিত অভিযোগ করলে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুম খান বলেন, এখনো পর্যন্ত কেউ এ ধরণের অভিযোগ নিয়ে আসেনি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেকে/এমআই