ভারতের মহারাষ্ট্রে ১৩ হাজার রুপি মাসিক বেতনে চাকরি করে বিলাসবহুল গাড়ি, ফ্ল্যাট ও প্রেমিকার জন্য হীরক-খচিত উপহার কিনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন হর্ষল কুমার ক্ষীরসাগর। তবে এই বিলাসিতা এসেছে বৈধ আয়ের মাধ্যমে নয়, বরং নিখুঁত পরিকল্পনায় ব্যাংক প্রতারণার মাধ্যমে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, হর্ষল কুমার একটি সরকারি স্পোর্টস কমপ্লেক্সে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তিনি কৌশলে ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২১ কোটি ৬০ লাখ রুপি স্থানান্তর করেন।
হর্ষল কুমার স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ই-মেইল ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য অফিসের পুরোনো লেটারহেড ব্যবহার করেন এবং মূল ই-মেইল ঠিকানার মতো দেখতে একটি নতুন ই-মেইল তৈরি করেন, যেখানে কেবল একটি অক্ষর পরিবর্তন করা হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে নতুন ই-মেইলে লেনদেনের যাবতীয় তথ্য পাঠায়।
এই কৌশল ব্যবহার করে তিনি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা চালু করেন এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ সরিয়ে নেন।
তদন্তে জানা গেছে, প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে হর্ষল কুমার ১ কোটি ২০ লাখ রুপিতে একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি, ১ কোটি ১৩ লাখ রুপির একটি এসইউভি এবং ৩২ লাখ রুপির একটি বিএমডব্লিউ মোটরসাইকেল কিনেছেন। এছাড়া প্রেমিকার জন্য ছত্রপতি সম্ভাজিনগরের কাছে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট এবং হীরক-খচিত চশমা উপহার দেন।
ঘটনা প্রকাশ পায় যখন ক্রীড়া বিভাগের একজন আধিকারিক আর্থিক অনিয়ম লক্ষ্য করে অভিযোগ দায়ের করেন। বর্তমানে হর্ষল পলাতক। তার দুই সহযোগী, যশোদা শেঠি এবং তার স্বামী বিকে জীবন, ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন।
সিনিয়র পুলিশ অফিসার প্রশান্ত কদম জানিয়েছেন, এফআইআরে তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং টাকার লেনদেনে জড়িত ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোর নথি সংগ্রহ করা হয়েছে। বিলাসবহুল গাড়ি ও অন্যান্য সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত হর্ষলকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
১৩ হাজার রুপি বেতনের পেছনে লুকিয়ে থাকা এই বিশাল প্রতারণা কেবল হর্ষল কুমারের পরিকল্পনা নয়, বরং এর সঙ্গে আরও অনেকের জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। এই ঘটনা ভারতের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন সৃষ্টি করেছে।
কেকে/এএম