কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বৈশ্বিক আর্থিক খাতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশ ধীরে ধীরে এ প্রযুক্তি গ্রহণ করছে এবং আর্থিক খাতে এর ব্যবহার বাড়ছে। অর্থায়নে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব, বাস্তব-বিশ্বের প্রয়োগ এবং ভবিষ্যতের ক্যারিয়ারের সুযোগ সম্পর্কে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বিস্তারিত তুলে ধরেন অধ্যাপক ড. শাহ মিয়া।
সম্প্রতি ব্র্যাক বিজনেস স্কুল (বিবিএস) ‘আর্থিক রূপান্তরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে। আর্থিক খাতের পুনর্গঠনে এআই-এর ভূমিকা সম্পর্কে মূল বক্তা হিসেবে ড. শাহ মূল্যবান বক্তব্য রাখেন।
ড. শাহ মিয়া বলেন, ট্রেডিশনাল ব্যাংকিংয়ে এআই খুবই দরকার। ব্যাংকিং সিস্টেমে যদি এআই যোগ করা না যায় তাহলে এ খাতে ধ্বস নামবে। যাতে কোন ফ্রট করতে না পারে সেজন্য কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যাংকিংয়ে যোগ করলে ট্রেডিশনাল আইসিটিকে মডার্ণ করবে। আমাদের ছাত্রদের এ বিষয়ে জ্ঞান বৃদ্ধি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ব্যাংকগুলো ইতোমধ্যে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে চলে গেছে। আমাদের দেশের ব্যাংকগুলো এখনো ক্রিপ্টো কারেন্সি যোগ করেনি। ব্যাংকগুলোতে এ ধরনের রেসকিউ মারাত্মক শর্টেজে আছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উৎসাহ দিতে হবে যাতে শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে প্রচুর জ্ঞান ও ধারনা থাকে। এআইকে আরো অগ্রগামী করে কীভাবে ডিজিটাল ব্যাংকিং আরো স্মার্ট করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। যাতে মানি লন্ডারিং করতে না পারে, মানি ট্রানজিকশনের সকল ডকুমেন্ট যেন সুরক্ষিত থাকে, কোন প্রকার হ্যাকার যাতে আমাদের ব্যাংকিং খাতকে নষ্ট করতে না পারে এ ব্যাপারে এআই দারুণ ভূমিকা রাখবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এআই বিষয়ে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাইরের দেশে এ সেক্টরে আমূল পরিবর্তন হয়েছে।
অধ্যাপক শাহ মিয়া অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্যাসল বিজনেস স্কুলে বিজনেস অ্যানালিটিক্সের অধ্যাপক, ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যানালিটিক্সের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর এবং অ্যালামনাই এনগেজমেন্টের পরিচালক। এর আগে শাহ মিয়া মেলবোর্নের ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়; সানশাইন কোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়; গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়; এবং কুইন্সল্যান্ডের জেমস কুক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন একাডেমিক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্স, ক্লাউড কম্পিউটিং, ডিজাইন সায়েন্স রিসার্চ মেথডোলজিস, মোবাইল অ্যাপস ডিজাইন, স্বাস্থ্যসেবা সিদ্ধান্ত সহায়তা উন্নয়ন এবং ইন্টারনেট অফ থিংস সক্ষম প্রযুক্তি গ্রহণের মতো বিষয়গুলিতে গবেষণা করেছেন।
অধ্যাপক মিয়া ২০০ টিরও বেশি প্রকাশনা প্রকাশ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে গবেষণা বই, জার্নাল নিবন্ধ, এবং রেফারি কনফারেন্স নিবন্ধ। তার অসাধারণ কাজ জার্নাল অব দ্য অ্যাসোসিয়েশন ফর ইনফরমেশন সিস্টেমস, জার্নাল অব দ্য অ্যাসোসিয়েশন ফর ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ইনফরমেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড পিপল এবং নলেজ-ভিত্তিক সিস্টেমের মতো ক্ষেত্রের শীর্ষ-স্তরের আউটলেটগুলিতে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি অস্ট্রেলিয়ান ব্যবসায়িক শিল্পে বিভিন্ন পরামর্শ এবং সমস্যা সমাধান গবেষণা কার্যক্রম এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত।
অধ্যাপক শাহ মিয়া ৪০ টিরও বেশি পিএইচডি গবেষণাপত্র পরীক্ষা করেছেন। এখন পর্যন্ত ১৫টি পিএইচডি ডিগ্রি সমাপ্তির সফলভাবে তত্ত্বাবধান করেছেন এবং বর্তমানে অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিকভাবে ১৪টিরও বেশি পিএইচডি প্রকল্প তত্ত্বাবধান করছেন।
কেকে/এজে