ধরলার ভাঙন ও বন্যার পর ক্ষতিগ্রস্ত জমি থেকে জীবন-জীবিকার নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন ফুলবাড়ীর কৃষকেরা। অসম সাহস নিয়ে ধূ-ধূ বালুচরে স্বপ্ন বুনছেন তারা। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলা নদীর তীরবর্তী এলাকার কৃষকেরা এখন বালুচরে ভুট্টা চাষ করে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন।
উপজেলার নাওডাঙ্গা, শিমুলবাড়ী, বড়ভিটা ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের মানুষ প্রতি বছর ধরলার বন্যা ও ভাঙনে বড় ক্ষতির শিকার হন। গত কয়েক বছরের দফায় দফায় বন্যা এবং এবার নদীর আগ্রাসী ভাঙনে ফসলি জমি পরিণত হয়েছে বালুচরে। তবু হাল ছাড়েননি কৃষকেরা।
বড়ভিটা ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের চরাঞ্চলে দেখা গেছে, কৃষকেরা ভুট্টা চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কৃষক জালাল উদ্দিন জানান, আমার সব ধানিজমি ধরলার পেটে চলে গেছে। এখন নদীর চরে বালু জমিতে ভুট্টা আবাদ করছি। আমার আর কোনো উপায় নেই।
একই এলাকার কৃষক রহমত আলী বলেন, ১০ বিঘা জমির মধ্যে ৯ বিঘাই নদীতে বিলীন হয়েছে। মাত্র ১ বিঘা জমি বাকি আছে। সেই বালুচরেই বীজ ও সার কিনে ভুট্টা চাষ করছি।
ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের কৃষক রফিকুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম জানান, বন্যার পর জমিতে বালু জমেছে। এখন সেই জমিতেই ভুট্টা চাষ করছেন। প্রায় ৩০ দিন আগে বীজ বপন করা হয়েছে, এবং ফসলের অবস্থা ভালো দেখা যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, গত বছর ভুট্টার ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় এ বছর চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। উপজেলায় প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টার বীজ বপন শেষ হয়েছে। ৩৫০ জন কৃষককে ভুট্টা বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।
কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। সঠিক পরিচর্যা হলে এবারও ভালো ফলনের প্রত্যাশা করছেন তারা।
কেকে/এএম